আগস্ট ৬, ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে চলমান সংঘাতের কারণে মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। খাদ্য, পানি, চিকিৎসা সামগ্রী এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এলেও বাংলাদেশের একটি বেসরকারি সংস্থা ‘হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি’ সরাসরি গাজার চারটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ও মানবিক সহায়তা দিচ্ছে। এই উদ্যোগটি বাংলাদেশের জনগণের মানবিক চেতনার প্রতিফলন।
ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা ভূখণ্ডের চারটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা, খাদ্য ও পানি সহায়তা দিচ্ছে সরকার-নিবন্ধিত বাংলাদেশি সংস্থা হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি। গত ১ আগস্ট থেকে এই সংস্থাটি গাজায় তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, যা স্থানীয় মানুষদের মধ্যে ব্যাপক আশার সঞ্চার করেছে। ফিলিস্তিন সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত ৩১ জুলাই সংস্থাটিকে এই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আনুষ্ঠানিক অনুমতিপত্র প্রদান করে।
যে চারটি হাসপাতালে এই সেবা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে সেগুলো হলো:
-
পশ্চিম গাজার শারে আল-ওয়াহদাহের মুজাম্মাউশ শিফা আত-তিব্বি
-
উত্তর গাজার আন-নসরের রানতিসি বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল
-
মধ্য গাজার ডেয়ার আল-বালাহের আল-আকসা হাসপাতাল
-
দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসের ইউরোপিয়ান গাজা হাসপাতাল
সংস্থাটির কর্মীরা আশ্রয় শিবির থেকে শুরু করে হাসপাতালের বারান্দা পর্যন্ত ছুটে যাচ্ছেন খাদ্য, ওষুধ, পানি এবং চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে। হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটির সহ-সভাপতি মাওলানা মুহসিন বিন মুঈন জানান, তাদের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈধতার আওতায় মিশরে গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি কর্মীদের হাতে নগদ অর্থ হস্তান্তর করেন। এরপর এই অর্থ ব্যাংক অব ফিলিস্তিনের মাধ্যমে গাজায় প্রেরিত হয়। কোনো কারণে প্রতিনিধিরা যেতে না পারলে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বিশ্বস্ত ছাত্রদের মাধ্যমে এই অর্থ পাঠানো হয়।
এছাড়া, সংস্থাটি রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গাজায় প্রবেশ করা তিন শতাধিক শিশুর জন্য একটি স্কুল পরিচালনার উদ্যোগও নিয়েছে। এই শিশুদের কাছে 'বাংলাদেশ' শব্দটি এখন কৃতজ্ঞতা ও আশার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইবরাহিম মিয়া বলেন, "মানবতার পক্ষে দাঁড়ানো কোনো অপরাধ নয়। যুদ্ধ আমাদের মনুষ্যত্ববোধকে থামাতে পারেনি। আমরা সেই নিষ্পাপ শিশুদের পাশে দাঁড়িয়েছি, যাদের শৈশব ধ্বংসস্তূপে মুছে গেছে। ইতিহাসই প্রমাণ রাখবে যে মানবিকতার পক্ষে সাহসিকতাই শ্রেষ্ঠ।"