মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধের দাবি ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ১০, ২০২৫, ১১:২৪ এএম

গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধের দাবি ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

ছবি- সংগৃহীত

গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ‘তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে’ এবং ‘পদক্ষেপ নিতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারসেন আগাবেকিয়ান শাহিন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকের আগে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শনিবার (৯ আগস্ট) আল জাজিরাকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে ভারসেন আগাবেকিয়ান শাহিন বলেন, "গাজা পরিস্থিতি নিয়ে রোববার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে বৈঠকে বসা ১৫ সদস্যবিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদকে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।"

উল্লেখ্য, ইসরায়েলের গাজা সিটি দখলের নতুন পরিকল্পনা দেশটির পার্লামেন্টে অনুমোদন পাওয়ার পর এই বৈঠক ডেকেছে নিরাপত্তা পরিষদ।

আগাবেকিয়ান শাহিন বলেন, "আমি আশা করি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আন্তর্জাতিক আইন ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে সমর্থন করবে।"

তিনি বলেন, "গত ২২ মাস ধরে ফিলিস্তিনে যা চলছে, তা গণহত্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। এটি ইসরায়েলের সম্প্রসারণবাদী মতাদর্শের অংশ, যা পুরো ফিলিস্তিন রাষ্ট্র দখল করতে চায়।"

চলতি সপ্তাহেই ইসরায়েলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। ফলে প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক দক্ষিণে তথাকথিত ‘ঘনসংকুচিত অঞ্চলগুলোতে’ সরিয়ে নেওয়া হবে। ফিলিস্তিনিরা এই জবরদস্তিমূলক স্থানান্তরের বিরোধিতা করছে। এছাড়া বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, এই পরিকল্পনা গাজার ইতিমধ্যে চলা ভয়াবহ মানবিক সংকটকে আরও খারাপ করবে এবং ব্যাপক প্রাণহানির ঝুঁকি তৈরি করবে।

আল জাজিরাকে আগাবেকিয়ান শাহিন বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন যদি সত্যিই সমাধান চায়, তাহলে ফিলিস্তিনিদের অধিকারকে সম্মান জানাতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, "ফিলিস্তিনিদের অধিকার যদি সম্মানিত না হয়, তাহলে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন, এমনকি এই অঞ্চল বা বিশ্বের কোথাও শান্তি আসবে না। সেই অধিকার মানেই একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা।"

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর গাজার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে করা মন্তব্যের সমালোচনা করে আগাবেকিয়ান শাহিন বলেন, গাজার জনগণ কাকে তাদের শাসক হিসেবে বেছে নেবে, সে সিদ্ধান্ত একমাত্র তারাই নিতে পারবে। তিনি প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) কথা উল্লেখ করে বলেন, "আজ গাজার ওপর আইনি ও রাজনৈতিক কর্তৃত্ব পিএলও'র। যদি গাজা মূলে, অর্থাৎ সম্পূর্ণ ফিলিস্তিনি ভূমিতে ফিরে যেতে চায়, তাহলে তাকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ, পিএলও-এর নিয়ন্ত্রণ ও শাসনাধীনে আসতে হবে।"

গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধের ছায়ায় অধিকৃত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিরা দেশটির সামরিক ও বসতি স্থাপনকারীদের আক্রমণের তীব্রতার মুখোমুখি হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ার নিন্দাও জানান আগাবেকিয়ান শাহিন।