রবিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২

ট্রাম্প ক্লান্ত, পুতিন অনমনীয়: শীর্ষ বৈঠকের ফল কী?

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ১৬, ২০২৫, ১০:৪৮ এএম

ট্রাম্প ক্লান্ত, পুতিন অনমনীয়: শীর্ষ বৈঠকের ফল কী?

ছবি- সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যকার বহুল প্রতীক্ষিত শীর্ষ বৈঠক শেষ হয়েছে। আলোচনার ফলাফল নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। যদিও বৈঠকের পর ট্রাম্প এবং পুতিন উভয়ই ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন, তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইউক্রেন ইস্যুতে রুশ প্রেসিডেন্ট বিন্দুমাত্র নমনীয় হননি। অন্যদিকে, ট্রাম্পকে ক্লান্ত এবং বিরক্ত দেখাচ্ছিল।


ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এটিই ছিল ট্রাম্প এবং পুতিনের মধ্যকার প্রথম সরাসরি শীর্ষ বৈঠক। এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইউক্রেন সংকটের একটি সম্ভাব্য সমাধান খুঁজে বের করা। তবে, পশ্চিমা দেশগুলো এবং ইউক্রেন আশঙ্কা করছিল যে, এই বৈঠকে তাদের এড়িয়ে কোনো চুক্তি হতে পারে। যদিও এমন কোনো চুক্তি হয়নি, তবে বৈঠক থেকে পুতিনের প্রাপ্তিই বেশি বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।

আলোচনায় রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন তার অবস্থানে অটল ছিলেন। তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের "মূল কারণ" নিয়ে কথা বলেছেন এবং তার অবস্থান পরিবর্তনের কোনো ইঙ্গিত দেননি। তিনি বলেন, "আমরা আশা করি কিয়েভ ও ইউরোপীয় রাজধানীগুলো বিষয়টিকে গঠনমূলকভাবে দেখবে এবং কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে না।" এই মন্তব্যকে তিনি ইউক্রেন এবং তার মিত্রদের প্রতি একটি হুমকি হিসেবে দেখেছেন।

ট্রাম্পের দেহভঙ্গি এবং বক্তব্যে বোঝা যাচ্ছিল যে, তিনি আলোচনায় কার্যকর কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেননি। তিনি ক্লান্ত ও বিরক্ত দেখাচ্ছিলেন। দুই নেতা একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজও করেননি এবং পুতিন দ্রুত নিজের বিমানে ফিরে গেছেন। এসব বিষয় ইঙ্গিত করে যে, যুদ্ধবিরতি বা রাশিয়ার ভূমির আকাঙ্ক্ষার মতো কঠিন বিষয়গুলোতে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

এই বৈঠক থেকে পুতিন দুটি বড় সুবিধা পেয়েছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। প্রথমত, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপ্রধানের মতো সম্মান পেয়েছেন। একজন অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীর জন্য এটি এক অসাধারণ ভাবমূর্তির পুনর্বাসন। দ্বিতীয়ত, এই বৈঠক তাকে ইউক্রেনে তার বাহিনীকে ফ্রন্টলাইনে আরও এগিয়ে যাওয়ার জন্য সময় দিয়েছে। পুতিনের মন্তব্যে তাড়াহুড়ার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি; বরং তিনি আরও বৈঠক ও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

ইউক্রেন এই বৈঠক থেকে কোনো খারাপ খবর পায়নি। কোনো আকস্মিক মার্কিন-রুশ মৈত্রী বা তাদের পক্ষে ক্ষতিকর কোনো চুক্তি হয়নি। তবে তাদের জন্য পরিস্থিতি অপরিবর্তিতই রয়ে গেছে। পুতিন তার কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনে ধীরগতিতে হলেও এগিয়ে যাচ্ছেন। যদিও ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হয়ে গৌণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারেন, তবে পুতিনকে তাড়াহুড়ো করতে দেখা যায়নি, যা তার আত্মবিশ্বাসের ইঙ্গিত দেয়।