আগস্ট ৩০, ২০২৫, ১১:৪০ পিএম
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চীনে দেওয়া উষ্ণ লাল গালিচা সংবর্ধনা আন্তর্জাতিক মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ২০২০ সালে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় সীমান্ত সংঘাতের পর দুই দেশের সম্পর্ক যখন কিছুটা তলানিতে, তখন এই ধরনের উষ্ণ অভ্যর্থনা নতুন কোনো কৌশলগত ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্ব রাজনীতি বিশ্লেষকরা।
শনিবার (৩০ আগস্ট) সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দিতে চীনের তিয়ানজিন শহরে পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিয়ানজিনের বিনহাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে উষ্ণ সংবর্ধনা জানানো হয়। চীনের তথ্য ও সম্প্রচার ও শিল্পমন্ত্রী লি লেচেং উপস্থিত থেকে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই উষ্ণ সংবর্ধনা কেবল আতিথ্যের প্রতীক নয়, বরং চীনের সঙ্গে ভারতের ভবিষ্যতের কৌশলগত সম্পর্কের একটি সূচক।
বিশ্লেষকদের মতে, মোদির এই সংবর্ধনা সম্পর্ক পুনর্গঠন এবং ভবিষ্যতের অংশীদারত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত। বিশেষ করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে এই সফরের তাৎপর্য আরও বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে ভারতের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে, যা এই সফরের প্রেক্ষাপটে চীনের দেওয়া উষ্ণ অভ্যর্থনা মোদির কূটনৈতিক প্রাধান্যকে আরও দৃঢ় করছে এবং ভারতের বৈশ্বিক কৌশলগত অবস্থানকে নতুন মাত্রা দিচ্ছে।
সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি শুধু এসসিও সম্মেলনে অংশ নেবেন না, তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করবেন। বৈঠকে সীমান্ত ইস্যু, বাণিজ্য ও মার্কিন শুল্কসহ গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয় আলোচনা হবে।
সম্প্রতি মোদি ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর বৈঠকে দুই পক্ষ একমত হয়েছেন যে, তারা প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং অংশীদার। ভারত ও চীনের সহযোগিতা শুধু আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করবে না, বরং বৈশ্বিক অর্থনীতি, শক্তির ভারসাম্য এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতিতেও গভীর প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে। দুই দেশের জনসংখ্যা বিশ্বের প্রায় ৩৫ শতাংশের কাছাকাছি। অর্থনৈতিক দিক থেকে চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং ভারত খুব শিগগিরই তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির মর্যাদা অর্জন করবে। এই প্রেক্ষাপটে দুই দেশের সহযোগিতা ‘এশিয়ান সেঞ্চুরি’ বাস্তবায়নে অপরিহার্য।