সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫, ০৯:৫২ এএম
মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মেটা কিশোর-কিশোরীদের অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তাদের এআই চ্যাটবটের নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। সম্প্রতি কিশোরদের মধ্যে এআই চ্যাটবট ব্যবহারের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এই পরিবর্তনের পর বিষয়টি নিয়ে মার্কিন সিনেটের বিচার বিভাগীয় কমিটি তদন্তও শুরু করেছে, যা নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
মেটার নতুন নীতি অনুযায়ী, এখন থেকে তাদের এআই চ্যাটবট ১৮ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের সঙ্গে সীমিত পরিসরে কথোপকথন করবে। এই বট শুধু শিক্ষামূলক বা নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের প্রশ্নের উত্তর দেবে। যদি কোনো ব্যবহারকারী স্বাস্থ্য, মানসিক চাপ, সম্পর্ক অথবা ব্যক্তিগত তথ্য সংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন করে, তাহলে চ্যাটবট তাকে নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইটে যেতে অথবা অভিভাবক বা শিক্ষকের সাহায্য নিতে উৎসাহিত করবে।
বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর চাপ দিয়ে আসছিলেন, কারণ তারা মনে করেন যে কিশোর-কিশোরীরা কৌতূহলবশত ঝুঁকিপূর্ণ বা স্পর্শকাতর বিষয়ে তথ্য খুঁজতে পারে। যদি এআই চ্যাটবটগুলোতে সঠিক ফিল্টারিং ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে তারা বিভ্রান্তিকর বা ক্ষতিকর তথ্য পেতে পারে, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বর্তমানে সিনেটের বিচার বিভাগীয় কমিটি মেটার নতুন নীতি বাস্তবে কতটা কার্যকর এবং এটি সত্যিই কিশোরদের অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে। কমিটি বিশেষভাবে জানতে চাইছে যে মেটা ব্যবহারকারীদের বয়স যাচাই, কন্টেন্ট ফিল্টার প্রয়োগ এবং শিশুদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে।
শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন এই নীতি পরিবর্তনকে স্বাগত জানালেও তাদের মতে, এটি যথেষ্ট নয়। তারা নিয়মিত রিপোর্ট প্রকাশ এবং একটি স্বাধীন পর্যবেক্ষক সংস্থা গঠনের দাবি জানিয়েছে।
মেটার একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, "আমরা চাই কিশোর-কিশোরীরা নিরাপদে প্রযুক্তি ব্যবহার করুক। আমাদের এআই চ্যাটবট এখন আর ব্যক্তিগত বা স্পর্শকাতর বিষয়ে কোনো পরামর্শ দেবে না, বরং নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্য খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।"
বিশ্লেষকদের মতে, কিশোরদের অনলাইন নিরাপত্তা এখন বিশ্বব্যাপী আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য নতুন আইন এবং বিধিনিষেধ আরোপের দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। মেটার এই নীতিগত পরিবর্তন তাই শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের একক পদক্ষেপ নয়, বরং পুরো প্রযুক্তি খাতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে।