সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৫, ০৯:৩৮ এএম
ইসরায়েলের ৭০০ দিনের ধ্বংসযজ্ঞে গাজার প্রায় ৯০% অবকাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে নিহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু ও নারী। এই ভয়াবহ মানবিক সংকটে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের টানা ৭০০ দিনের আগ্রাসী হামলায় গাজার প্রায় ৯০% অবকাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। শনিবার মিডল ইস্ট মনিটর-এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
গণমাধ্যম অফিস এক বিবৃতিতে জানায়, ইসরায়েল এই অঞ্চলে 'গণহত্যা ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির সুপরিকল্পিত নীতি' অনুসরণ করছে। তাদের হিসাব মতে, এখন পর্যন্ত প্রায় ৭৩ হাজার ৭০০ জনের বেশি মানুষ নিহত বা নিখোঁজ হয়েছেন। এর মধ্যে ২০ হাজার শিশু এবং ১২ হাজার ৫০০ নারী রয়েছে। এই যুদ্ধে ২ হাজার ৭০০টি পরিবার সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
হামলায় নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৬৭০ জন চিকিৎসাকর্মী, ২৪৮ জন সাংবাদিক এবং ১৩৯ জন সিভিল ডিফেন্স সদস্য। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬২ হাজারেরও বেশি মানুষ, যাদের অনেকে স্থায়ী পঙ্গুত্ব বা দৃষ্টিশক্তি হারানোর মতো মারাত্মক আঘাতের শিকার। এই ধ্বংসযজ্ঞে ৩৮টি হাসপাতাল, ৮৩৩টি মসজিদ এবং ১৬৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে। এছাড়াও, হাজার হাজার সরকারি স্থাপনা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অভিযোগ করা হয়েছে যে, ইসরায়েল গাজা শহর ও উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের তাদের বাড়িতে ফিরতে বাধা দিচ্ছে এবং অনাহারকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে গণ-বাস্তুচ্যুতি চালাচ্ছে। গণমাধ্যম অফিস আরও জানায়, লক্ষাধিক ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে, যার ফলে ২৪ লাখের বেশি বাসিন্দা চরম দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে পড়েছে। এদের মধ্যে ১০ লাখেরও বেশি শিশু রয়েছে।
গণমাধ্যম অফিস এই ধ্বংসযজ্ঞের জন্য ইসরায়েল ও তার মিত্র দেশ, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছে। তারা আরব ও ইসলামি দেশগুলোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং জাতিসংঘের প্রতি অবিলম্বে আগ্রাসন বন্ধ, অবরোধ প্রত্যাহার, বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোকে ফিরিয়ে আনা এবং আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরায়েলি নেতাদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছে।