সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

ভারতের শুল্ক দ্বিগুণ, মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের সম্ভাবনা

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ৬, ২০২৫, ১১:৩৯ পিএম

ভারতের শুল্ক দ্বিগুণ, মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের সম্ভাবনা

AI Generate

যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ হওয়ার ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও অন্যান্য পণ্যের জন্য বিশাল সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই শুল্ক ব্যবধান কীভাবে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতকে এগিয়ে নিতে পারে, তা নিয়েই বিস্তারিত এই প্রতিবেদন।

রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানির ‘শাস্তি’ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর ফলে দেশটিতে ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট শুল্ক ৫০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে মার্কিন বাজারে ভারতের চেয়ে ৩০ শতাংশ কম শুল্ক সুবিধা পাবে বাংলাদেশ, যা দেশের রপ্তানি খাতের জন্য এক নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। এই নতুন শুল্ক হার আগামী ৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ তালিকা অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশ ২০ শতাংশ শুল্ক সুবিধা পাচ্ছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সর্বনিম্ন। অন্যদিকে, ভারতের শুল্ক হার ৫০ শতাংশে উন্নীত হওয়ায় দেশটির প্রতিযোগী সক্ষমতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তৈরি পোশাক, চামড়া ও জুতা শিল্পের মতো প্রধান রপ্তানি খাতে এই শুল্ক ব্যবধানের কারণে ভারতীয় পণ্যের চাহিদা কমতে পারে, যার সরাসরি সুফল পেতে পারে বাংলাদেশ।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ পোশাক আমদানিকারক। এই বাজারে ভারত ও বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে প্রধান প্রতিযোগী। কিন্তু নতুন শুল্ক নীতির কারণে মার্কিন খুচরা বিক্রেতারা এখন স্বাভাবিকভাবেই কম শুল্কের কারণে ভারতীয় পণ্যের চেয়ে বাংলাদেশের পণ্যের প্রতি বেশি আগ্রহী হবেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

একইভাবে, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোও ২০ শতাংশের কাছাকাছি শুল্ক সুবিধা পাচ্ছে, যা ভারতের তুলনায় অনেক কম। ফলে ইলেকট্রনিক্স, জুতা ও অন্যান্য হালকা শিল্পপণ্যের বাজারে ভারতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। বাংলাদেশের জন্য এটি একটি কৌশলগত সুযোগ। বিশেষ করে পোশাক, চামড়া এবং জুতা শিল্পে উৎপাদন সক্ষমতা এবং মান নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে পারলে এই সুযোগকে কাজে লাগানো সম্ভব হবে।

ভারতের ওপর এই কঠোর শুল্ক আরোপের পেছনে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তির অচলাবস্থাও একটি বড় কারণ। যুক্তরাষ্ট্র চাইছে ভারত জেনেটিক্যালি মডিফায়েড (জিএম) ভুট্টা ও সয়াবিনের মতো পণ্যের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিক, যা ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও কৃষিক্ষেত্রে বিতর্কিত একটি ইস্যু। এই জটিলতার কারণে বাণিজ্য চুক্তি আটকে আছে এবং তার প্রভাব পড়েছে শুল্ক নীতির ওপর।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য জরুরি হলো উৎপাদন সক্ষমতা, লজিস্টিকস এবং গুণগত মান বৃদ্ধি করা, যাতে মার্কিন বাজারের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়।