সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৫, ১১:২৫ পিএম
হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় পর্যায়ক্রমে ৬৪টি ‘মডেল মন্দির’ নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। প্রতিটি মন্দির নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ১০ কোটি টাকা। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর টিকাটুলিতে শ্রীশ্রী স্বামী ভোলানন্দগিরি আশ্রমে বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশনের (বাংলাদেশ) দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে এই পরিকল্পনার কথা জানান সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার।
তপন মজুমদার তার বক্তব্যে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে বলেন, তারা সারা দেশে মডেল মসজিদ নির্মাণ করলেও হিন্দুদের জন্য মডেল মন্দির নির্মাণে তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে আওয়ামী সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা হিন্দুদের বিপদের মুখে ফেলে রেখে ভারতে চলে গেছেন। তিনি দখলদারদের প্রতি আহ্বান জানান যে, দেশের এক হাজার একর বেদখল হওয়া দেবোত্তর সম্পত্তি অবিলম্বে ফিরিয়ে দিলে মডেল মন্দির নির্মাণে কোনো অসুবিধা হবে না।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীশ্রী স্বামী ভোলানন্দগিরি আশ্রম ট্রাস্টের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। তিনি বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশনকে তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পরও হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্য অব্যাহত রয়েছে।” তিনি দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেন যে, “সামনে যত অন্ধকারই আসুক, আমরা এ দেশে সমান অধিকার নিয়েই থাকব।” সুব্রত চৌধুরী বিএনপির প্রতি হিন্দু সম্প্রদায়কে কাছে টানার আহ্বান জানান, যাতে তারাও বিএনপিকে আপন করে নিতে পারে।
এছাড়াও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব বক্তব্য দেন। তারা সবাই হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দেন। মনীন্দ্র কুমার নাথ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা-মামলা ও নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। সম্মেলন শেষে বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশনের (বাংলাদেশ) ৪৫ সদস্যের নতুন আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়, যেখানে বরুন চন্দ্র সরকার সভাপতি এবং রঘুপতি সেন মহাসচিব নির্বাচিত হন।