মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২

বাংলাদেশের রাজনীতিতে কেন বিএনপির প্রয়োজনীয়তা ছিল?

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ২৫, ২০২৫, ১০:৪১ পিএম

বাংলাদেশের রাজনীতিতে কেন বিএনপির প্রয়োজনীয়তা ছিল?

ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এ দিনটিই দেশের একটি বিশেষ রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক প্রয়োজনের ফসল হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর জন্মলগ্ন। স্বাধীনতা-পরবর্তী একদলীয় শাসনব্যবস্থা শেষে যখন দেশ একটি রাজনৈতিক শূন্যতায় ভুগছিল, তখন গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং একটি শক্তিশালী বিকল্প রাজনৈতিক ধারা তৈরির প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভূত হয়।

১৯৭৫ সালের পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক ধরনের স্থবিরতা দেখা দেয়। স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের পাশাপাশি একটি সুসংগঠিত রাজনৈতিক বিকল্পের অনুপস্থিতি ছিল স্পষ্ট। এই শূন্যতা পূরণের জন্যই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান 'বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ'-এর দর্শন নিয়ে বিএনপির আত্মপ্রকাশ ঘটান। এই দর্শন দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং সব নাগরিকের সমান অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে জিয়াউর রহমান প্রথমেই সামরিক-বেসামরিক সম্পর্ক পুনর্গঠন এবং দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেন। তবে তার সবচেয়ে বড় অবদান ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তন। একদলীয় শাসনের অবসান ঘটিয়ে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে আবার সক্রিয় হওয়ার সুযোগ দেন। তিনি ১৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন এবং দেশজুড়ে গণসংযোগ শুরু করেন। ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার নির্বাচনের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চালু করা হয়। ১৯৭৮ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে বাংলাদেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের ভিত্তি স্থাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে ধরা হয়।

জিয়াউর রহমানের শাসনামলে দেশের অর্থনীতিতে 'বেসামরিকীকরণ' প্রক্রিয়া শুরু হয়। তিনি কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেন। একই সঙ্গে, বাস্তববাদী পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অবস্থানকে শক্তিশালী করেন। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন, চীন ও মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানো তার পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম দিক ছিল।