আগস্ট ৩, ২০২৫, ০৫:২০ পিএম
বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বরাবরই রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার কেন্দ্রে থাকে, বিশেষ করে নির্বাচনকালীন সময়ে এর নিরপেক্ষতা ও কার্যকারিতা নিয়ে বিতর্ক ওঠে। সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে একটি নতুন দল ইসির ভূমিকা নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছে এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এই ঘটনাটি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।
নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) 'একটি দলের উর্দি পরা মেরুদণ্ডহীন প্রতিষ্ঠান' বলে আখ্যা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী। পাশাপাশি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
আজ রোববার (৩ আগস্ট) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাসির উদ্দিন বলেন, "গত ১৫ বছর ধরে দেশের মানুষ সুষ্ঠু ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। বর্তমান পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চাইলে একটি দল ছাড়া অন্যদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনই বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।" তিনি আরও বলেন, "যদি ইসি ভোট নেওয়া ও দেওয়ার সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে এনসিপি নির্বাচনে অংশ নেবে না।"
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক অভিযোগ করেন, "আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটি নির্দিষ্ট দল ছাড়া অন্যসব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ রোধ করতে ইসি নানাভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো এবং জুলাই সনদের আলোকে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি তুলবো।"
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এনসিপির নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় সংশোধনী কাগজপত্র ইসিতে জমা দেওয়া হয়েছে এবং দলটি শাপলা প্রতীক বরাদ্দের আশা করছে। এছাড়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমের নিয়মিত অগ্রগতি জানাতে প্রতি ১৫ দিন পরপর অনলাইনে ব্রিফিং আয়োজনের দাবি জানান তিনি।
এদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন পাটোওয়ারীর নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ইসিতে যায়। নাসির উদ্দিন ছাড়া প্রতিনিধি দলে ছিলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা।
এর আগে নির্বাচন কমিশন এনসিপিসহ ১৪৪টি নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আবেদন যাচাই-বাছাই করে তথ্য ঘাটতির বিষয়ে চিঠি দেয়। এনসিপির ক্ষেত্রে ছয়টি বিষয় চিহ্নিত করা হয়েছিল। যার মধ্যে ছিল, জেলা ও উপজেলা কমিটির তালিকা, অফিস ভাড়ার চুক্তিপত্র, তহবিলের উৎস ও পরিমাণ, কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তের স্বাক্ষর, গঠনতন্ত্র সংবিধান পরিপন্থি নয় এ মর্মে প্রত্যয়ন এবং প্রার্থী মনোনয়নে প্যানেল ব্যবস্থার উল্লেখ।