আগস্ট ১, ২০২৫, ০৬:৫৪ পিএম
বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের আরোপিত পাল্টা শুল্কের হার ৩৫ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে আনাকে রপ্তানি খাতের জন্য একটি ‘সন্তোষজনক অবস্থা’ হিসেবে দেখেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ শুক্রবার দুপুরে গুলশানে নিজের বাসায় সাংবাদিকদের কাছে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
আমির খসরু বলেন, "এটা জয়-পরাজয়ের কোনো বিষয় না। যে শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতিযোগিতায় আমরা তুলনামূলকভাবে একটা সন্তোষজনক অবস্থানে আছি।"
তিনি শুল্ক হারের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে বলেন, "আমরা ২০%, পাকিস্তান ১৯%, ভিয়েতনামে ২০%, ভারতে ২৫%। সেই ক্ষেত্রে আমি মনে করি, সার্বিকভাবে ট্যারিফের ফিগারটা সন্তোষজনক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র। ট্যারিফ বিষয়ে আমাদের প্রতিযোগিতাদের সঙ্গে সেটা হয়েছে ঠিকই আছে। এটা সন্তোষজনক।"
তবে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের নতুন এই হারের পেছনে কী আছে সেই প্রসঙ্গটি টেনে সাবেক এই বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, "পুরো নেগোসিয়েশনের সার্বিক বিষয়টা তো আমাদের জানা নেই। আমরা শুধু ট্যারিফের বিষয়টা জানি।"
তিনি আরও বলেন, "সার্বিক বিষয়টা জানার পরে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারব। এর (ট্যারিফ) বিপরীতে আর কী দিতে হয়েছে সেটা না জানা পর্যন্ত এর ইমপেক্টটা কী হবে সেটা আমরা বলতে পারছি না।"
আমির খসরু মনে করেন, "নেগোসিয়েশনের পেছনের যে বিষয়গুলো… এটা তো একটা প্যাকেজ। এখানে অনেকগুলো সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুধু মাত্র ট্যারিফের কত পার্সেন্ট কমানো হলো সেটা সিদ্ধান্ত হয়নি।" তার মতে, "এ সিদ্ধান্তের পেছনে অনেক আলাপ-আলোচনা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের কী দাবি-দাওয়া ছিল এ বিষয়গুলো প্রকাশ হলে আমরা বুঝতে পারব।"
২৫টি বোয়িং বিমান কেনার বিষয়ে বাণিজ্য সচিবের মন্তব্যের সঙ্গে শুল্কের সম্পর্ক আছে কিনা—এমন প্রশ্নে আমির খসরু বলেন, "কিছু তো করতেই হবে। কারণ আমেরিকানদের পুরো ট্যারিফের বিষয়টা হচ্ছে, আমেরিকানদের পণ্য রপ্তানির স্বার্থে। সেজন্য তো এই অতিরিক্ত ট্যারিফ আরোপ করা হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "কিন্তু সেটা করতে গিয়ে বাংলাদেশ কতটুকু অ্যাবজর্ভ করতে পারবে, আমাদের অর্থনীতি কতটুকু অ্যাবজর্ভ করতে পারবে, ব্যবসায়ীরা কতটুকু অ্যাবজর্ভ করতে পারবে, ইকোনমি কতটুকু অ্যাবজর্ভ করতে পারবে সেই বিষয়গুলো আলোচনার বিষয়। আমরা বিস্তারিত জানলে সেটার ওপর মন্তব্য করতে পারব। আমি মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পুরো বিষয়টা খোলাসা করা উচিত।"
আমির খসরু মন্তব্য করেন, "বাণিজ্য শুধু আমেরিকার সঙ্গে নয়… অন্যান্য দেশের সঙ্গেও আমাদের পণ্য রপ্তানি হয়। সেই জায়গাগুলো বিবেচনায় নিয়ে সম্মিলিতভাবে আমরা কোথায় দাঁড়াচ্ছি সেটা বুঝতে হবে, পর্যালোচনা করতে হবে। একই সঙ্গে রপ্তানিটা আমাদের আরও বেশি ডাইভারসিফাই করতে হবে। বিদেশে ডাইভারসিফাই করতে, দেশেও ডাইভারসিফাই… শুধু আমেরিকা নির্ভরশীল অর্থনীতি হতে পারে না। সেটাই হচ্ছে আমাদের আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ।"