সেপ্টেম্বর ১, ২০২৫, ০৯:৪৩ এএম
হাশরের ময়দানে ধর্ম বিমুখতা এবং মিথ্যার করুণ পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। পবিত্র কোরআনের সুরা আনআমের ২২-২৪ আয়াতে এর সুস্পষ্ট চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সেই কঠিন দিনে সকল মানুষকে একত্র করবেন, আর মুশরিকদের সামনে তাদের উপাস্যদের হাজির করে জিজ্ঞেস করবেন, “তোমরা যাদেরকে আমার শরীক মনে করতে, তারা আজ কোথায়?” সেই দিন মুশরিকদের কোন যুক্তি বা অজুহাত থাকবে না। তারা হতবুদ্ধি হয়ে আল্লাহর সামনেই মিথ্যা শপথ করে বলবে, “আমাদের রব আল্লাহর শপথ! আমরা তো মুশরিকই ছিলাম না।”
তাদের এই মিথ্যাচার হবে এক চরম হতবুদ্ধিতার প্রকাশ, কারণ আল্লাহর মহাশক্তি এবং ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখার পরেও তারা নিজেদের অপরাধ অস্বীকার করতে চাইবে। এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, দুনিয়ায় যারা মিথ্যাচারে অভ্যস্ত ছিল, আখিরাতের কঠিন পরিস্থিতিতেও তারা সেই অভ্যাস থেকে মুক্ত হতে পারবে না। আল্লাহ তাআলা তাদের এই সুযোগ দেবেন যাতে তাদের মিথ্যাচার সবার সামনে উন্মোচিত হয়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, “তারা আল্লাহর সামনে শপথ করে মিথ্যা বলবে, যেমন তারা আজ দুনিয়ায় মুমিনদের সামনে মিথ্যা শপথ করে।” (সুরা আল-মুজাদালাহ, আয়াত: ১৮)
এই মিথ্যা কসমের পর আল্লাহ তাদের মুখে মোহর এঁটে দেবেন এবং তাদের হাত, পা, চোখ, কানসহ সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেওয়ার নির্দেশ দেবেন। তখন এই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোই তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। কোরআনে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, “আজ আমি তাদের মুখে মোহর এঁটে দেব, তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা সাক্ষ্য দেবে তাদের কৃতকর্মের।” (সুরা ইয়াসীন: ৬৫) এভাবে তাদের মিথ্যাচার প্রকাশ পাবে এবং তারা অপমানিত হবে। যে সকল উপাস্যকে তারা আল্লাহর কাছে সুপারিশকারী ভাবত, সেই দিন তাদের কেউ সাহায্য করতে আসবে না, এবং তাদের সকল মনগড়া ধারণা ভুল প্রমাণিত হবে।
এই করুণ পরিণতি থেকে শিক্ষা নিয়ে মুমিনদের জন্য প্রয়োজন সত্যের পথে অটল থাকা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “মিথ্যা থেকে বাঁচো; কারণ মিথ্যা পাপাচারের সহচর, আর মিথ্যা ও পাপাচার উভয়ই জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়।” (ইবনে হিব্বান: ৫৭৩৪) তাই, দুনিয়ায় মিথ্যা ও পাপাচার থেকে দূরে থেকে সত্যের পথে জীবন যাপন করা প্রতিটি মুমিনের জন্য অপরিহার্য।