মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২

দ্বিনি জ্ঞানের পথে আলেমদের নির্দেশনা অপরিহার্য

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৫, ১০:৩৪ এএম

দ্বিনি জ্ঞানের পথে আলেমদের নির্দেশনা অপরিহার্য

ছবি - সংগৃহীত

মুসলিম সমাজ আলেমদের দ্বারা নানাভাবে উপকৃত হয়। তাঁদের মাধ্যমে সমাজের চারিত্রিক, আত্মিক, ধর্মীয় ও জ্ঞানগত চাহিদা পূর্ণ হয়। আলেমদের কাছে আছে কোরআন-সুন্নাহর গভীর জ্ঞান, যার মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর বিধি-বিধান, হালাল-হারাম এবং জীবনের আসল পরিচয় সম্পর্কে জানতে পারে। তাঁদের সংস্পর্শে এসে মানুষ আলোকিত জীবনের সন্ধান পায় এবং দুনিয়ার ভোগ-বিলাসে নিমজ্জিত জীবন থেকে আখিরাতমুখী জীবনে ফিরে আসে। তাঁরা উম্মতের জন্য রহমত ও বরকতস্বরূপ।

আলেম ও জাহেলের পার্থক্য

ইলম বা জ্ঞান আল্লাহর এক অফুরন্ত নিয়ামত, যা জ্ঞানী ও মূর্খদের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে। আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেছেন, "বলুন! যারা জানে এবং যারা জানে না তারা কি সমান?" (সুরা: জুমার, আয়াত: ৯) তিনি আরও বলেছেন, "বলুন! অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান হতে পারে? আলো ও অন্ধকার কি এক হতে পারে?" (সুরা: রাদ, আয়াত: ১৬) এই আয়াতগুলো প্রমাণ করে যে, জ্ঞানীদের মর্যাদা মূর্খদের চেয়ে অনেক ঊর্ধ্বে।

কোরআনের সঠিক ব্যাখ্যা

মহান আল্লাহ মানবতার হেদায়েতের জন্য কোরআন নাজিল করেছেন। কিন্তু এই কোরআন সবাই সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারে না। শুধু আলেমরাই এর সঠিক ব্যাখ্যা বুঝতে সক্ষম। আল্লাহ বলেন, "অথচ এগুলোর সঠিক ব্যাখ্যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। আর গভীর জ্ঞানীরা বলে, আমরা এগুলোতে বিশ্বাস স্থাপন করলাম। সব কিছু আমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে এসেছে।" (সুরা: আলে ইমরান, আয়াত: ৭)

আলেমদের দায়িত্ব ও অনুসরণ

মানুষকে দ্বিনের পথে আহ্বান করা এবং তা শিক্ষা দেওয়া আলেমদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। কোরআনে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্যের পাশাপাশি আলেমদের আনুগত্য করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেছেন, "হে ঈমানদাররা! তোমরা আল্লাহর নির্দেশ মান্য করো, অনুসরণ করো রাসুলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা কর্তৃত্বসম্পন্ন (ন্যায়পরায়ণ শাসক ও আলেম) তাদের।" (সুরা: নিসা, আয়াত: ৫৯) যেকোনো শরয়ি সমস্যা নিরসনে আলেমদের দ্বারস্থ হওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ।আলেমরা নবীদের উত্তরাধিকারী

 

আলেমদের অস্তিত্ব ছাড়া কোনো মুসলিম সমাজের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। তাঁরা নবীদের জ্ঞানের উত্তরাধিকারী। এই বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "আলেমরা নবীদের উত্তরাধিকারী। তাঁরা কোনো স্বর্ণমুদ্রা বা রৌপ্যমুদ্রার উত্তরাধিকার রেখে যান না, তাঁরা রেখে যান জ্ঞানের উত্তরাধিকার।" (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস: ৩৬৪১)

এছাড়া, সালাতের ইমাম হওয়ার জন্য দ্বিনি জ্ঞানে পারদর্শীরাই বেশি হকদার। আলেমরাই বিবেকসম্পন্ন হয়ে থাকেন এবং আল্লাহর উদাহরণগুলো সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারেন। এ কারণে দ্বিনি জ্ঞানের পথে আলেমদের নির্দেশনা অপরিহার্য।