সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৫, ১০:১৭ এএম
ইসলাম ধর্মের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী, যা ছিল কোরআনের বাস্তব রূপ। তার দয়া, ক্ষমা, মহানুভবতা এবং সহিষ্ণুতার অসংখ্য দৃষ্টান্ত রয়েছে। এখানে তার চরিত্রের কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরা হলো:
১. শত্রুকে ক্ষমা: একবার এক মরুভূমিতে যুদ্ধের অভিযান শেষে রাসূলুল্লাহ (সা.) একটি বাবলাগাছের নিচে তরবারি ঝুলিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এই সুযোগে এক কাফের বেদুইন তার তরবারি নিয়ে নবীজির সামনে দাঁড়িয়ে জানতে চায়, ‘হে মুহাম্মদ! এখন আমার হাত থেকে তোমাকে কে রক্ষা করবে?’ জবাবে রাসূল (সা.) দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘আল্লাহ।’
এতে লোকটি ভয়ে কাঁপতে শুরু করে এবং তার হাত থেকে তরবারিটি পড়ে যায়। নবীজি (সা.) তখন তরবারিটি হাতে তুলে নিয়ে তাকে প্রশ্ন করেন, ‘এখন তোমাকে আমার হাত থেকে কে বাঁচাবে?’ লোকটি নিজের অন্যায়ের জন্য ক্ষমা চাইলে নবীজি (সা.) তাকে তৎক্ষণাৎ ক্ষমা করে দেন। (বুখারী: ২৯১০)
২. সহিষ্ণুতা ও ক্ষমাশীলতা: একবার জায়েদ নামের এক ইহুদি নবীজির (সা.) সঙ্গে একটি অগ্রিম কেনাবেচা সম্পন্ন করে। নির্ধারিত সময়ের দু-তিন দিন আগেই সে এসে কঠোর ভাষায় তার প্রাপ্য পরিশোধের জন্য চাপ দেয়। এমনকি সে নবীজির চাদর টেনে বেয়াদবিমূলক আচরণ করে। এ দৃশ্য দেখে সেখানে উপস্থিত সাহাবী উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) অত্যন্ত ক্রোধান্বিত হন।
কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সা.) ছিলেন পূর্ণ শান্ত। তিনি উমর (রা.)-কে বলেন, ‘হে উমর! আমি ও এই ব্যক্তি তোমার থেকে ভিন্নরূপ আচরণ প্রত্যাশা করেছিলাম। তোমার উচিত ছিল আমাকে দ্রুত তার প্রাপ্য পরিশোধ করার পরামর্শ দেওয়া এবং তাকে নম্রতার সঙ্গে পাওনা চাইতে তাগিদ দেওয়া।’
এরপর নবীজি (সা.) তাকে তার প্রাপ্য পরিশোধ করার নির্দেশ দেন এবং উমর (রা.)-এর ধমকের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২০ সা বেশি দিতে বলেন। নবীজির এই সহিষ্ণু আচরণে মুগ্ধ হয়ে লোকটি ইসলাম গ্রহণ করে। (মুসনাদে আহমাদ: ৩/১৫৩)