বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২

বিসিবিতে তদন্তের নামে হয় শুধু ‘প্রহসন’

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ২৮, ২০২৫, ১১:০৫ এএম

বিসিবিতে তদন্তের নামে হয় শুধু ‘প্রহসন’

ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) তদন্ত কমিটিগুলোকে প্রায়শই 'প্রহসন' বলে আখ্যায়িত করা হয়, কারণ তাদের তদন্ত রিপোর্টগুলো খুব কমই আলোর মুখ দেখে অথবা কোনো কার্যকর ফল বয়ে আনে। বিসিবির এক সাবেক পরিচালকের মতে, "তদন্ত কমিটিরও তদন্ত করা উচিত। রিপোর্ট জমা দিয়ে কখনও খোঁজ নেয় না... অনেক সময় রিপোর্টও জমা দেয় না। আসলে এই তদন্ত ব্যাপারটাই একটা প্রহসন।"

সবশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ (ডিপিএল) এবং বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ফিক্সিং-কাণ্ড নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটিগুলো রিপোর্ট জমা দিলেও সেগুলো নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আরও চাঞ্চল্যকর খবর হলো, ফিক্সিংয়ের মতো সংবেদনশীল রিপোর্টও বিসিবিতে জমা দেওয়ার আগেই সাংবাদিকদের হাতে পৌঁছে গেছে। এ ধরনের ঘটনা তদন্তের স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।

২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে দলের ব্যর্থতা এবং ক্রিকেটার নাসুম আহমদের সঙ্গে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের মধ্যকার ঘটনা নিয়েও একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু জালাল ইউনুস ও এনায়েত হোসেন সিরাজের মতো সাবেক পরিচালকদের নিয়ে গঠিত সেই কমিটি তাদের রিপোর্টে কোনো কিছুই খুঁজে পায়নি। একইভাবে, ২০১৫ সালে শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে পেসার আল আমিন হোসেনকে টুর্নামেন্টের মাঝপথ থেকে বাদ দেওয়া হলেও, তার কারণ কখনো জানানো হয়নি।

২০১৮ ও ২০১৯ সালে ঢাকা লিগে আম্পায়ারদের পক্ষপাতমূলক আচরণের ঘটনা চোখে পড়ার মতো হলেও, তদন্ত কমিটিতে তা প্রমাণ করা যায়নি। একইভাবে, বিপিএল-এর শুরু থেকেই ফিক্সিংয়ের অভিযোগ থাকলেও বিসিবির দুর্নীতি দমন কমিশন এবং অন্যান্য তদন্ত কমিটিগুলো কোনো প্রমাণ পায়নি। অথচ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এ ধরনের প্রমাণ খুঁজে পেয়েছিল। বিসিবির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, "নাম আসবে কীভাবে? যারা করেন, যারা কমিটিতে থাকেন কিংবা করেন ঘুরে ফিরে তো সবাই এক ব্যক্তি।"

বিসিবির তদন্ত প্রক্রিয়ার এই ব্যর্থতার মূল কারণ হিসেবে অনেকে সুশাসনের অভাব এবং স্বার্থের দ্বন্দ্বকে দায়ী করছেন। দীর্ঘদিনের ক্রিকেট সংগঠক ও লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের মালিক লুৎফুর রহমান বাদল বলেন, "পলিসি মেকারের কাজ কখনোই কর্মচারী দিয়ে হয় না। যেখানে কোনো সুশাসন নেই, কোনো লক্ষ্য নেই, দীর্ঘ মেয়াদি কোনো পরিকল্পনা নেই... সেখানে বাস্তব ফল পাওয়া যাবে না।" তিনি আরও বলেন, বড় পদে থাকা ব্যক্তিরা যদি শুধু নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য কাজ করেন, তাহলে ক্ষমতার অপব্যবহার হবেই।