আগস্ট ৩, ২০২৫, ০১:২৭ পিএম
টানা বৃষ্টি এবং মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলি জমি ডুবে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন ধানের বীজতলা, যার ফলে উপকূলীয় এ অঞ্চলের কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, দুই উপজেলায় মোট ১২০ হেক্টর জমির আমন ধানের বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। মৌসুমের শুরুতেই এই বড় ক্ষতি হওয়ায় ধান উৎপাদন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
সরেজমিনে রামগতির চরপোড়াগাছা, চরগাজী, বড়খেরী, চরবাদাম ও কমলনগরের চরকাদিরা, তোরাবগঞ্জ ও জাঙ্গালিয়া এলাকায় দেখা গেছে, অনেক চাষির আমনের বীজতলা এখনো পানির নিচে। চাষিরা জানিয়েছেন, একদিকে টানা বৃষ্টির পানি, অন্যদিকে মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করেছে। খাল ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে পানি বের হতে না পারায় তলিয়ে যাওয়া ফসল পচে যাচ্ছে।
চরপাগলা গ্রামের কৃষক মো. কবির হোসেন ব্যাপারী জানান, "বড় আশা নিয়ে ৩২ শতাংশ জমিতে চারা রোপণ করেছিলাম। সবই পানির নিচে।" জাঙ্গালিয়ার কৃষক মো. আতরের জামান বলেন, "খাল সংস্কার না করায় পানি বের হতে পারেনি। তাই এমন সর্বনাশ।" চরপোড়াগাছার কৃষক আলমগীর মিয়া ক্ষোভের সাথে বলেন, "ভূলুয়া নদী খননের দাবি জানালেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এখন ধান চাষ করা সম্ভব নয়।" চরসীতা গ্রামের কৃষক সফিক উল্লাহ আরও আক্ষেপ করে বলেন, "২০ শতাংশ জমিতে বীজ রোপণ করেছি, সব পানির নিচে। এসব বলেও তো লাভ নেই।"
কমলনগর উপজেলায় ২১৯ হেক্টর জমিতে বীজতলা রোপণ করা হয়েছিল, যার মধ্যে প্রায় ৯০ হেক্টর পানিতে তলিয়ে গেছে। রামগতিতে ৩০০ হেক্টরের মধ্যে ৩০ হেক্টর জমির বীজতলা একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিক উল্লাহ মুরাদ বলেন, "টানা বৃষ্টিতে মৌসুমের শুরুতে রোপণ করা অনেক বীজতলা নষ্ট হয়েছে। এখনো বৃষ্টি চলছে। সরকারিভাবে সহায়তা পেলে কৃষকরা আবার নতুন করে রোপণ করতে পারবেন।"
রামগতি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের তালিকা তৈরি করে কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। কমলনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ইকতারুল ইসলাম বলেন, "আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।"