সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২

বাগেরহাটের হাটে কোটি টাকার পান, লোকসানে চাষিরা

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ১৮, ২০২৫, ১০:২৫ এএম

বাগেরহাটের হাটে কোটি টাকার পান, লোকসানে চাষিরা

ছবি- সংগৃহীত

ন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি হলো বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার নোয়াপাড়ার ১৩৭ বছরের ঐতিহ্যবাহী পানের হাট। মাত্র দুই থেকে তিন ঘণ্টার এই হাটে প্রতিবার কোটি টাকার পান কেনাবেচা হয়। শীত মৌসুমে এই লেনদেন বেড়ে দেড় থেকে দুই কোটি টাকায় পৌঁছায়। কিন্তু এত বড় বাণিজ্যিক কার্যক্রম সত্ত্বেও, হাটের অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়ন হয়নি এবং পানচাষিরা ন্যায্য দাম না পেয়ে লোকসান গুনছেন।

সপ্তাহে দুদিন, বৃহস্পতিবার ও রোববার, ভোর ৪টা থেকে শুরু হয়ে মাত্র কয়েক ঘণ্টা চলে এই হাট। সরেজমিনে দেখা যায়, হাজারো মানুষের ভিড় ঠেলে চাষিরা কলাপাতায় মোড়ানো পানের গাদা মাথায় নিয়ে আসছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা আসেন পান কিনতে।

 পানচাষি সরদার কামরুল ইসলাম জানান, "পান চাষ করেই আমাদের জীবিকা চলে। কিন্তু বর্তমানে দাম পড়ে যাওয়ায় লাভ তো দূরের কথা, লোকসান গুনতে হচ্ছে।" আরেক চাষি মিজানুর রহমান বলেন, "এত কষ্ট করে চাষ করি, কিন্তু এখন এক গাদা পান বিক্রি করে লেবারের মজুরিও ওঠে না।"

চাষি ও ইজারাদারদের অভিযোগ, কোটি টাকার লেনদেন হলেও হাটে নেই কোনো ছাউনি, টয়লেট কিংবা বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা। বর্ষাকালে হাট কাদা ও বৃষ্টিতে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। হাটের ইজারাদার তাজুল ইসলাম বলেন, "১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকার ইজারা হলেও কোনো সরকারি উন্নয়ন হয়নি। অব্যবস্থাপনার কারণে আগের মতো দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় হয় না।"

উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমনা আইরিন জানান, বিষয়টি সম্প্রতি তার নজরে এসেছে। তিনি বলেন, "সরেজমিনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে হাটবাজার উন্নয়ন ফান্ড থেকে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হবে।"

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঐতিহ্যবাহী হাটের গৌরব ধরে রাখতে হলে দ্রুত অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং পানচাষিদের জন্য ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা জরুরি।