আগস্ট ২১, ২০২৫, ০৯:৩২ এএম
বর্তমান সময়ে একটি নীরব ঘাতকের মতো আমাদের সুস্থ জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করছে। শহরাঞ্চল থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যন্ত, বিকট শব্দের মোটরসাইকেলের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীর একটি গ্রামে, যেখানে অতিষ্ঠ গ্রামবাসীরা নিজেরাই এই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এসেছেন এবং বিকট শব্দের মোটরসাইকেল চালানোর জন্য যুবকদের এক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়েছেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, গ্রামের কিছু যুবক তাদের মোটরসাইকেল থেকে সাইলেন্সার খুলে বিকট শব্দ সৃষ্টি করে চলাফেরা করছিল। এতে গ্রামের বয়স্ক ব্যক্তি, শিশু এবং অসুস্থ রোগীরা ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা সহ্য করার পর, গ্রামবাসী আর নীরব থাকেননি। তারা একত্রিত হয়ে সেই যুবকদের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
গ্রামের বেশ কিছু মানুষ একত্রিত হয়ে সেই যুবকদের থামিয়ে তাদের বাইকের সাইলেন্সার নিয়ে প্রশ্ন করেন। এক পর্যায়ে তাদের ক্ষোভ এতই বেড়ে যায় যে তারা বাইকটি চালকের হাত থেকে কেড়ে নেন এবং রাগের মাথায় বাইকটিকে মাটিতে ফেলে দেন। এরপর তারা বাইকটির সাইলেন্সারসহ বিভিন্ন অংশ ভেঙে ফেলেন। এই ঘটনার পর, বাইক চালক তার ভুলের জন্য ক্ষমা চাইতে থাকে। এসময় গ্রামের একজন বয়স্ক ব্যক্তি তাকে বোঝান যে কেন এই ধরনের বিকট শব্দ সৃষ্টি করা শুধুমাত্র আইনত অপরাধ নয়, বরং এটি পরিবেশ এবং মানুষের স্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর। এই পদক্ষেপের ফলে, যুবকরা তাদের ভুল বুঝতে পারে এবং ভবিষ্যতে এমন কাজ আর করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়।
চিকিৎসকদের মতে, বিকট শব্দ মানুষের শ্রবণশক্তির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে এবং এটি উচ্চ রক্তচাপ, অনিদ্রা, এবং মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্কদের জন্য এই ধরনের শব্দ অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই ধরনের সচেতনতা এবং সম্মিলিত প্রতিরোধই আমাদের সমাজকে এই নীরব দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।
রাজশাহীর গ্রামবাসীদের এই পদক্ষেপটি সমাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। এটি প্রমাণ করে যে, যখন আইনগত ব্যবস্থা ধীরগতিতে কাজ করে, তখন জনগণ নিজেদের অধিকার রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হতে পারে। তবে, এই ধরনের পদক্ষেপ যেন কোনোভাবেই আইন নিজেদের হাতে তুলে নেওয়ার পর্যায়ে না পৌঁছায়, সেদিকেও নজর রাখা জরুরি। এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, একটি সুস্থ ও শান্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা আমাদের সকলের সম্মিলিত দায়িত্ব।