বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন চাওয়া হলেও তহবিল সংগ্রহে জোর

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ২০, ২০২৫, ১১:৩৮ এএম

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন চাওয়া হলেও তহবিল সংগ্রহে জোর

সংগৃহীত

২০২৫: রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক মহলের মনোযোগ ফেরাতে এবং মানবিক সহায়তার জন্য তহবিল সংগ্রহে জোর দিচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী ২৪ থেকে ২৬ আগস্ট কক্সবাজারে শুরু হতে যাচ্ছে স্টেকহোল্ডার সংলাপ। এই সংলাপকে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের একটি প্রস্তুতিমূলক ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

 জাতিসংঘের উদ্যোগে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের প্রস্তুতি হিসেবে কক্সবাজারে এই সংলাপের আয়োজন করা হয়েছে। এতে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি, জাতিসংঘ, স্থানীয় প্রশাসন, আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা এবং বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অংশ নেবেন। সংলাপে মূল লক্ষ্য থাকবে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আলোচনা করা এবং একই সঙ্গে ক্যাম্পের মানবিক সহায়তার জন্য অর্থসংকট মোকাবিলায় তহবিল সংগ্রহের উপায় বের করা।

 জানা গেছে, ২৪ আগস্ট প্রথম দিনে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের পাশাপাশি স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির বিষয়ে আলোচনা হবে। এই দিন রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা নিজেদের দাবি ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন।

২৫ আগস্ট মূল অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস। তিনি রোহিঙ্গা সংকটকে মানবিক ও কূটনৈতিকভাবে সমাধানের আহ্বান জানাবেন। একই দিনে রোহিঙ্গা বিষয়ক বিশেষ দূত ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টাও বক্তব্য দেবেন।

প্রত্যাবাসনের চেষ্টা থাকলেও মিয়ানমারের চলমান সংঘাতের কারণে তা এখনো অনিশ্চিত। তাই সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এখন মানবিক সহায়তার ওপর বেশি জোর দিচ্ছে। বিভিন্ন এনজিও ও আন্তর্জাতিক সংস্থা সতর্ক করেছে যে, অর্থ না পেলে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়বে। সম্প্রতি রোহিঙ্গা সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক তহবিল অনেক কমে গেছে। তাই এই সংলাপে জরুরি তহবিল সংগ্রহকে একটি বড় অগ্রাধিকার হিসেবে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই সংলাপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে রোহিঙ্গাদের বর্তমান বাস্তব চিত্র তুলে ধরার একটি বড় সুযোগ।

এই সংলাপে একটি নতুন দিক হলো, রোহিঙ্গাদের নিজস্ব কণ্ঠস্বরকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরা। প্রথম দিন থেকেই রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তারা তাদের অভিজ্ঞতা, চাহিদা, নিরাপত্তা উদ্বেগ এবং প্রত্যাবাসন নিয়ে মতামত দেবেন। সরকার চায়, রোহিঙ্গাদের বাস্তব চাহিদা ও সংকট বিশ্বমঞ্চে প্রতিফলিত হোক।

 বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একাধিকবার আলোচনা হলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর প্রত্যাবাসনের কোনো রূপরেখা দৃশ্যমান নয়। রাখাইনের সংঘাত এবং রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত না হওয়া প্রত্যাবাসনের পথে বড় বাধা। যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বিমসেটক সম্মেলনের সাইডলাইনে জানানো হয়েছিল যে মিয়ানমার ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নেবে, কিন্তু পরবর্তীতে এই বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।