আগস্ট ২০, ২০২৫, ০৯:৪৭ এএম
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ঘুসের টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় এক সেবাগ্রহীতাকে দোতলা থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় ভূমি অফিসগুলোতে চলমান দুর্নীতির চিত্র আবারও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম আল আমিন অভিযোগ করেন, তিনি জমির মিউটেশনের জন্য কলাকান্দা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে সেখানকার ভূমি কর্মকর্তা সৈয়দ আহাম্মদ তার কাছে অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। আল আমিন এতে অসম্মতি জানালে কর্মকর্তা তার ফাইল জানালা দিয়ে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন এবং একপর্যায়ে তাকেও দোতলা থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন। এই ঘটনাটি দ্রুতই জানাজানি হয় এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ অনুযায়ী, মতলব উত্তর উপজেলার প্রায় সব ইউনিয়ন ভূমি অফিসেই ঘুসের লেনদেন একটি সাধারণ ঘটনা। মিউটেশনের জন্য আট থেকে দশ হাজার টাকা এবং অন্যান্য কাজের জন্য এক থেকে দুই হাজার টাকা ঘুস দিতে হয়। একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, ঘুসের টাকা দিলে কাজ হয়, অন্যথায় ফাইল আটকে থাকে। জমির নামজারি, খতিয়ান দেখা, তদন্ত প্রতিবেদন, এবং খাজনা আদায়ের প্রতিটি ধাপেই বাড়তি টাকা দিতে হয়।
ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের বড় হলদিয়া গ্রামের হাফেজ মিরাজুল করিম নামে আরেক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, ফরাজীকান্দি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা তানজির খান ঘুসের বিনিময়ে তার এক ভাইয়ের নামে হিস্যার চেয়েও বেশি জমি মিউটেশন করে দিয়েছেন।
কলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাইদুর রহমান সিপলু এই অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভূমি অফিসে ঘুস ছাড়া কোনো কাজ হয় না। কমপক্ষে ৬-৭ হাজার টাকা না দিলে জমির মিউটেশন করা হয় না। হানিরপাড় গ্রামের আমানউল্লাহ এবং দশানী গ্রামের আল-আমীন বেপারীও একই ধরনের অভিযোগ করে জানান যে, তাদের কাছ থেকে মিউটেশনের জন্য ৭ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মতলব সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিল্লোল চাকমা বলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনার অনলাইন সার্ভিসের কারণে দুর্নীতি কমেছে। তবে অনেকে না জানার কারণে দালালদের খপ্পরে পড়েন। অন্যদিকে, উপজেলা ইউএনও মাহমুদা কুলসুম মনি জানিয়েছেন, অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।