বিমান থেকে ১০টি চাকা চুরি, কোটি টাকা গায়েব!

রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজে ব্যবহৃত ১০টি চাকা ‘চুরি করে’ অন্য একটি বেসরকারি এয়ারলাইন্সকে দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার পেছনে বিমানেরই দুই কর্মীর জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। এই চাকাগুলোর আনুমানিক মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

গত ১৬ আগস্ট (শনিবার) সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্সের পাশে থাকা ‘অকশন শেড’ থেকে বিমানের ১০টি ‘আনসার্ভিসেবল টায়ার’ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই ঘটনা জানার পর বিমানের সহকারী ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) মোশারেফ হোসেন ১৯ আগস্ট (সোমবার) বিমানবন্দর থানায় একটি জিডি দায়ের করেন। জিডিতে সরাসরি চুরি উল্লেখ না করে বলা হয়েছে, চাকাগুলো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চাকার সন্ধান না পাওয়ায় বিমানের ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট সুপারভাইজার আরমান হোসেন ও স্টোর হেলপার সামসুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা জানান, যথাযথ কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই দেশের একটি বেসরকারি বিমান সংস্থার এক কর্মকর্তাকে এই ১০টি চাকা ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে।

বিমান সূত্রে জানা গেছে, একেকটি চাকার দাম ৫ থেকে ১৫ হাজার ডলার। সেই হিসেবে ১০টি চাকার মূল্য প্রায় কোটি টাকা। তবে এগুলো ব্যবহারের পর ‘অকশন শেডে’ রাখা হয়েছিল। বিমানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, এটি একটি গুরুতর অপরাধ এবং এ নিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু হয়েছে। এই ঘটনা বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তৈরি করেছে।

বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাসলিমা আক্তার বলেন, বিমানের পক্ষ থেকে উড়োজাহাজের চাকা সংক্রান্ত একটি জিডি করা হয়েছে। পুলিশ এই বিষয়ে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত দুই কর্মী চাকাগুলো অন্য সংস্থাকে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে বিমানের একাধিক উড়োজাহাজে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে, যা নিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এর মধ্যেই কোটি টাকার চাকা চুরির অভিযোগ নতুন করে বিমানের অব্যবস্থাপনার চিত্র সামনে এনেছে।