বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২

বিশ্ব মশা দিবস আজ, ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়ায় ঝুঁকিতে দেশ

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ২০, ২০২৫, ১১:৩১ এএম

বিশ্ব মশা দিবস আজ, ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়ায় ঝুঁকিতে দেশ

ছবি- সংগৃহীত

প্রতি বছর ২০ আগস্ট পালিত হয় বিশ্ব মশা দিবস। ১৮৯৭ সালের এই দিনে ব্রিটিশ চিকিৎসক স্যার রোনাল্ড রস প্রমাণ করেন যে অ্যানোফিলিস মশা ম্যালেরিয়ার পরজীবী বহন করে। এই আবিষ্কারের তাৎপর্য ধরে রাখতে ১৯৩০ সাল থেকে দিনটি বিশ্ব মশা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। এই দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য শুধু বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারকে স্মরণ করা নয়, বরং মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধের গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা।

২০২৫ সালের বিশ্ব মশা দিবসের প্রতিপাদ্য হলো: "একটি ন্যায়সঙ্গত বিশ্বের জন্য ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই ত্বরান্বিত করা।" এই প্রতিপাদ্যটি বিশেষ করে দরিদ্র ও দুর্বল জনগোষ্ঠীর মধ্যে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে বৈশ্বিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেয়।

উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে বাংলাদেশ মশা প্রজননের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ১২৬ প্রজাতির মশা শনাক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে ঢাকায় বর্তমানে ১৪ থেকে ১৬ প্রজাতির মশা পাওয়া যায়।

মশাবাহিত রোগগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ডেঙ্গু। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল এক হাজার ৭০৫ জন, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ২০২৪ সালেও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব অব্যাহত রয়েছে।

ডেঙ্গু সংক্রমণ ঘটায় এডিস মশার দুটি প্রজাতি— এডিস ইজিপ্টি (শহুরে মশা) এবং এডিস অ্যালবোপিকটাস (এশিয়ান টাইগার মশা)। এই মশাগুলো জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে বংশবিস্তার করে, যার কারণে বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যায়।

ডেঙ্গুর পাশাপাশি চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া এবং জাপানিজ এনকেফালাইটিসও বাংলাদেশে মশাবাহিত প্রধান রোগ। ২০০৮ সালে প্রথম চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়। ২০১৬-১৭ সালে এই রোগের বড় প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। অন্যদিকে, ম্যালেরিয়া প্রধানত দেশের ১৩টি পার্বত্য ও সীমান্ত জেলায় অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়।

বিশ্ব মশা দিবসে, মশাবাহিত রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের গুরুত্বকে আরও একবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।