আগস্ট ২৩, ২০২৫, ০৯:৫৭ এএম
গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে বড় ধরনের কোনো সহিংসতা না হলেও সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারি গেজেটে এই উপজেলার ২৮ জনের নাম 'আহত জুলাই যোদ্ধা' হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এই তালিকায় এমন অনেক ব্যক্তির নাম রয়েছে, যাদের আন্দোলনে কোনো ভূমিকা ছিল না; বরং তারা আন্দোলনের বিরোধী ছিলেন। এমনকি এই তালিকায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মী এবং লুটপাটকারী হিসেবে অভিযুক্তরাও রয়েছেন। এতে প্রকৃত জুলাই যোদ্ধাদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
-
কামরুল হাসান রাব্বি: নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এ কর্মী জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় জড়িত ছিলেন। তিনি ৫ আগস্ট লুটপাটে গিয়ে আহত হয়ে 'জুলাই যোদ্ধা' হিসেবে গেজেটভুক্ত হয়েছেন।
-
মো. রায়হান: তিনি ৪ আগস্ট পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন বলে দাবি করলেও যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন, সেটি সরকার পতনের দুই বছর আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। তা সত্ত্বেও তিনি গেজেটভুক্ত হয়েছেন।
-
মানসিক রোগীও তালিকায়: জুলাই যোদ্ধা নাহিদুল ইসলাম রাতুল দাবি করেছেন, তিনি আন্দোলনে মাথায় আঘাত পেয়ে মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি ছোটবেলা থেকেই মানসিক সমস্যায় ভুগছেন।
-
মৃত ব্যক্তিও আহত তালিকায়: এসডিএফ থেকে নাজমুল হাসানের পরিবারকে 'জুলাই আন্দোলনে নিহত' দেখিয়ে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। অথচ স্থানীয়দের মতে, তিনি ২৫ আগস্ট একটি কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে মারা যান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আব্দুল কাইয়ুম মাহিন বলেন, "আন্দোলনের সময় আমরা রাজপথে ছিলাম। অথচ গেজেটে যাদের নাম এসেছে তাদের অধিকাংশকেই আমরা চিনি না। অনেকে ভুয়া তথ্য দিয়ে সরকারি সহায়তা নিয়েছে। অবিলম্বে ভুয়া নাম বাতিল করে প্রকৃত আহতদের অন্তর্ভুক্ত করা হোক।"
শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিয়া হোসেন বলেন, "আমরা ইতোমধ্যে পাঁচজনের নাম গেজেট থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছি। প্রয়োজনে আরও যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"