সেপ্টেম্বর ১, ২০২৫, ১১:২১ এএম
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ সেখান থেকেই তার প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রম চালু করেছেন। নানা অনিয়মের মধ্য দিয়ে অনুমোদন পাওয়া ‘লালন বিজ্ঞান ও কলা বিশ্ববিদ্যালয়’-এর কার্যক্রম বর্তমানে কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের বাণিজ্যিক ভবনে চলছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ক্ষোভের মুখে পড়ে ব্যাপক ভাঙচুরের শিকার হয়েছিল হানিফের এই নির্মাণাধীন বিশ্ববিদ্যালয়টি। গণঅভ্যুত্থানের পর দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিলেও তিনি তার ‘সাম্রাজ্য’ ভেঙে পড়তে দেননি। তিনি ভারত থেকেই কৌশলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে ট্রাস্টি বোর্ড পরিবর্তন করিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী ফৌজিয়া আলমকে বাদ দিয়ে তার আস্থাভাজন ব্যক্তি হালিমুজ্জামানকে নতুন চেয়ারম্যান করা হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, "গোপনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড পরিবর্তন করা হয়েছে। নামমাত্র স্ত্রীকে বাদ দিয়ে তিনি পুরো নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতেই রেখেছেন।"
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ট্রাস্টি বোর্ড পরিবর্তন করে নভেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। জানুয়ারি ২০২৫ থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্র জানায়, পাঁচটি বিভাগে ভর্তির অনুমোদন থাকলেও এখন পর্যন্ত মোট ১০১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। কুষ্টিয়া জেলা পরিষদ মার্কেটের সপ্তম ও অষ্টম তলায় অবস্থিত নতুন ক্যাম্পাসটি আধুনিক সাজসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। তবে বাণিজ্যিক ভবনে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন নিয়ে আগে থেকেই নানা বিতর্ক ছিল।
এছাড়া, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এবার বিএনপিপন্থী এক শিক্ষক নেতাকে উপাচার্য (ভিসি) হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্র জানায়, উপাচার্য পদের জন্য যে তিনজনের প্যানেল মঞ্জুরি কমিশনে পাঠানো হয়েছে, তার মধ্যে এক নম্বরে রয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ফারুকুজ্জামান। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগের নাম ঘোচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে।