জুলাই ২৩, ২০২৫, ০৭:৪০ পিএম
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত মার্কিন শুল্কের হার কিছুটা কমবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি তুলনামূলক কম হওয়ায় (প্রায় ৬.৫ বিলিয়ন ডলার) যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক হ্রাসের বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারে। এই বিষয়ে আলোচনা করতে আগামী ১ আগস্টের আগেই বাণিজ্য উপদেষ্টা প্রতিনিধিদল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন বলেও তিনি জানান।
বুধবার (২৩ জুলাই, ২০২৫) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান।
লবিস্ট নিয়োগের প্রসঙ্গ ‘নেই’: অর্থ উপদেষ্টা
শুল্ক আরোপ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে লবিস্ট নিয়োগের দাবি জানানো হলে একজন সাংবাদিক এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এর জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, "এক্ষেত্রে লবিস্ট নিয়োগের কোনো প্রসঙ্গ নেই।" তিনি ব্যাখ্যা করেন, দীর্ঘ সময় নিয়ে কোনো আলোচনার ক্ষেত্রে সাধারণত এ ধরনের লবিস্ট নিয়োগ করা হয়। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে যা করতে হবে, তা দ্রুত করতে হবে। তার মতে, "ওরা তো ঢুকতেই পারবে না, ওই অফিসের কাছাকাছি। নেগোশিয়েশন তো দূরের কথা।" এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, লবিস্ট নিয়োগের প্রচলিত পদ্ধতি এই মুহূর্তে ফলপ্রসূ হবে না। বরং সরাসরি কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমেই দ্রুত সমাধান সম্ভব।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক ও বকেয়া পরিশোধ
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের একটি ভালো ইমেজ রয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের শেভরন, এক্সিলারেট এনার্জি এবং মেটলাইফের কিছু বকেয়া পরিশোধ করেছে। এর ফলস্বরূপ, ইউএস চেম্বারও বাংলাদেশের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে তাকে চিঠি লিখেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, বাংলাদেশের আর্থিক শৃঙ্খলা এবং সময়মতো দেনা পরিশোধের সক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক মহলে আস্থা তৈরি করেছে।
গুরুত্বপূর্ণ আমদানি অনুমোদন: সার, এলএনজি ও গম
বুধবারের বৈঠকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা জানান, দেড় লাখ টন সার (ইউরিয়া ও টিএসপিসহ বিভিন্ন রকম) আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি এলএনজি আমদানিরও অনুমোদন মিলেছে। এছাড়াও, ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আনার জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ গম আমদানির সিদ্ধান্তের পেছনে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, "আমরা একটু ডাইভার্সিফাই করতে চাচ্ছি।" তিনি উল্লেখ করেন, অনেক সময় রাশিয়ান ব্লক কিংবা ইউক্রেন ব্লকে একটি অনিশ্চয়তা দেখা গেছে, যা খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় ঝুঁকি তৈরি করে। সে কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এখন আমদানি বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা চলছে।
যুক্তরাষ্ট্রের গমের দাম তুলনামূলক বেশি কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি স্বীকার করেন যে, "দাম একটু বেশি হলেও আমরা অন্যদিকে দিয়ে সুবিধা পাব।" তিনি যোগ করেন, এই (যুক্তরাষ্ট্রের) গমের প্রোটিনের পরিমাণ কিছুটা বেশি। যদিও প্রোটিনের পার্থক্য খুব বেশি নয়, তবে এটি একটি বাড়তি সুবিধা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন: