জুলাই ২৩, ২০২৫, ০৭:৫০ পিএম
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করে বলেছে যে, যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস আবারও ২০০৪-২০০৫ সালের মতো বৈশ্বিক মহামারিতে রূপ নিতে পারে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সংস্থাটি এক সতর্কবার্তায় এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছে।
সাংবাদিকদের ব্রিফ করতে গিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চিকিৎসা কর্মকর্তা দিয়ানা রোহাস আলভারেজ বলেন, বিশ্বের ১১৯টি দেশের প্রায় ৫৬০ কোটি মানুষ বর্তমানে চিকুনগুনিয়া ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এই ভাইরাস তীব্র জ্বর, প্রচণ্ড জয়েন্ট ব্যথা এবং দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক অক্ষমতা সৃষ্টি করতে সক্ষম। উদ্বেগের বিষয় হলো, চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই।
দিয়ানা আরও বলেন, "ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে দেখছি আমরা। চিকুনগুনিয়ার আগের মহামারি শুরু হয়েছিল দ্বীপাঞ্চলগুলোতে। ২০০৪-২০০৫ সালের সেই প্রাদুর্ভাবে সারা বিশ্বে প্রায় ৫ লাখ মানুষ আক্রান্ত হন।"
বর্তমান প্রকোপ ও বিস্তৃতি: চিকুনগুনিয়ার নতুন প্রকোপ মূলত ২০২৫ সালের শুরুর দিক থেকে শুরু হয়েছে। ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপ লা রিইউনিয়ন, মায়োত ও মরিশাসে বড় ধরনের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে কেবল লা রিউনিওন দ্বীপেই এক-তৃতীয়াংশ জনগোষ্ঠী সংক্রমিত হয়ে পড়েছে।
এর পাশাপাশি, ভাইরাসটি ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে মাদাগাস্কার, সোমালিয়া ও কেনিয়ায়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও মহামারি পর্যায়ের সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে, যার মধ্যে ভারত অন্যতম।
বিশেষ উদ্বেগের বিষয় হলো—ইউরোপে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস বহন করে আসা রোগীর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়েও সংক্রমণ ছড়ানোর ঘটনা ধরা পড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ১ মে থেকে কেবল ফ্রান্সেই প্রায় ৮০০ জন 'ইমপোর্টেড' বা বিদেশফেরত চিকুনগুনিয়া রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়া ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলের একাধিক এলাকায় ১২টি 'লোকাল ট্রান্সমিশন' বা স্থানীয় সংক্রমণের ঘটনা শনাক্ত হয়েছে।
সংক্রমণ ও প্রতিরোধ: চিকুনগুনিয়া ভাইরাসটি মূলত টাইগার মশা নামে পরিচিত এডিস প্রজাতির মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এই মশা ডেঙ্গু ও জিকা ভাইরাসও বহন করে থাকে। দিনের বেলা কামড়ানো এই মশা দ্রুত ও ব্যাপকভাবে ভাইরাস ছড়ায়। যেহেতু এই রোগের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই, তাই মশা নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণই এই ভাইরাসের বিস্তার রোধে সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
আপনার মতামত লিখুন: