আগস্ট ১৭, ২০২৫, ০৪:৪৫ পিএম
পাকিস্তান-এর দক্ষিণাঞ্চলীয় সিন্ধু প্রদেশে এক তরুণ সাংবাদিকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক মহলসহ রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। নিহত সাংবাদিকের নাম খাওয়ার হুসাইন, যিনি করাচিভিত্তিক শীর্ষ সংবাদমাধ্যম ডন নিউজে কাজ করতেন। শনিবার (১৬ আগস্ট) গভীর রাতে সাঙ্গর শহরের হায়দরাবাদ রোডের একটি রেস্টুরেন্টের সামনে তার গাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। মাথায় গুলির চিহ্ন থাকায় তার মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাড়ির চালকের আসনে মৃত অবস্থায় হুসাইনকে পাওয়া যায়। তার কাছে একটি পিস্তল ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এটি আত্মহত্যা, নাকি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সাঙ্গর জেলার সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (এসএসপি) আবিদ বালোচ জানান, ফরেনসিক বিশ্লেষণ চলছে এবং তদন্ত শেষ হলে প্রকৃত মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
খাওয়ার হুসাইনের আকস্মিক মৃত্যুতে সিন্ধু প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সাইয়দ মুরাদ আলি শাহ তাৎক্ষণিকভাবে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “সাংবাদিক খাওয়ার হুসাইনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অবশ্যই নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে।”
পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি এবং সিন্ধের গভর্নর কামরান তেসোরিও এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে ঘটনার নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
করাচি প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফাজিল জামিলি ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল আফজাল খানসহ নির্বাহী পরিষদ এক যৌথ বিবৃতিতে এই ঘটনাকে “গভীর শোক ও আঘাতের” বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা সিন্ধু সরকারের কাছে দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্নবিদ্ধ। গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ সংস্থা ফ্রিডম নেটওয়ার্কের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে শুধু সিন্ধু প্রদেশেই সাংবাদিকদের ওপর ১৮৪টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ১০ জন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, পাকিস্তানে রাষ্ট্রীয় সংস্থা ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর চাপ ও হয়রানির শিকার হন সাংবাদিকরা।