আগস্ট ৩১, ২০২৫, ১০:৫৭ এএম
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মন্তব্য করেছেন, রাশিয়া ও চীনের সম্পর্ক এখন 'অভূতপূর্ব উচ্চতায়' পৌঁছেছে। একই সঙ্গে, অর্থনীতি থেকে শুরু করে কৌশলগত সমন্বয় পর্যন্ত দুই দেশের অংশীদারিত্ব আরও গভীর হচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। শনিবার (৩০ আগস্ট) চীনা বার্তা সংস্থা সিনহুয়া-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই তথ্য জানান।
পুতিন বলেন, ২০২১ সালের পর থেকে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে। বর্তমানে রাশিয়া চীনের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার। গত বছর রাশিয়া চীনের পঞ্চম বৃহত্তম বৈদেশিক অংশীদার হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। তিনি আরও জানান, দুই দেশের মধ্যে এখন প্রায় সম্পূর্ণভাবে নিজস্ব জাতীয় মুদ্রায় লেনদেন হচ্ছে। ডলার ও ইউরোর ব্যবহার 'পরিসংখ্যানগত ভুলের স্তরে' নেমে এসেছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট আরও উল্লেখ করেন, রাশিয়া এখনও চীনের শীর্ষ জ্বালানি সরবরাহকারী। ২০১৯ সালে চালু হওয়া 'পাওয়ার অব সাইবেরিয়া' পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ ইতোমধ্যেই ১০০ বিলিয়ন ঘনমিটার ছাড়িয়ে গেছে। তিনি বলেন, ২০২৭ সালে পূর্বাঞ্চলীয় গ্যাস পাইপলাইন সম্পন্ন হলে চীনে গাড়ি রপ্তানি ও জ্বালানির চাহিদা পূরণে রাশিয়ার ভূমিকা আরও বাড়বে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করবে।
শুধু অর্থনীতি নয়, কৌশলগত ক্ষেত্রেও রাশিয়া-চীনের সমন্বয়ের কথা তুলে ধরে পুতিন বলেন, এই সহযোগিতা 'বিশ্ব রাজনীতির একটি প্রধান উপাদান'। জাতিসংঘ ও গ্রুপ অব ফ্রেন্ডস ইন ডিফেন্স অব দ্য ইউএন চার্টার-এ দুই দেশের যৌথ কাজকে তিনি গ্লোবাল সাউথকে শক্তিশালী করার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে উল্লেখ করেন। উভয় দেশই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের পক্ষে, যাতে এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার প্রতিনিধিত্ব আরও বাড়ে।
পুতিন জানান, তারা ব্রিকসের মধ্যে চীনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন, যাতে এটি আন্তর্জাতিক কাঠামোর অন্যতম প্রধান ভিত্তি হিসেবে প্রভাব বাড়াতে পারে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলোকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের সংস্কারের আহ্বান জানান। বেইজিংয়ের সঙ্গে যৌথভাবে তিনি এমন এক 'নতুন আর্থিক ব্যবস্থা' গড়ে তোলার স্বপ্নের কথা বলেন, যা হবে ন্যায্য, উন্মুক্ত এবং 'নব-উপনিবেশবাদী উদ্দেশ্যের ঊর্ধ্বে'।