মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

কূটনীতিতে ড. ইউনূসের প্রভাব, অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ৭, ২০২৫, ১২:৪২ পিএম

কূটনীতিতে ড. ইউনূসের প্রভাব, অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

ছবি- সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে এক বছর পূর্ণ হলো। এই এক বছরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে তার প্রভাব এবং সরকারের আন্তর্জাতিক কৌশল নিয়ে কথা বলেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা এই সরকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।

 সম্প্রতি বাসসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের বিশ্বব্যাপী সুখ্যাতি ও সম্মান অনেক সময় এমন কিছু কূটনৈতিক দরজা খুলে দেয়, যা সাধারণ প্রক্রিয়ায় অর্জন করা কঠিন হতো। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, “একটি ফোন কলের মাধ্যমে প্রফেসর ইউনূস সংযুক্ত আরব আমিরাতে বন্দি অনেক বাংলাদেশির সাধারণ ক্ষমা নিশ্চিত করতে সহায়তা করেন।” তিনি এটিকে বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পদ হিসেবে অভিহিত করেন।


তৌহিদ হোসেন আরও বলেন, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক ব্যবসায় আজীবন অবদানের কারণে বিশ্বজুড়ে তার নাম সম্মানের সঙ্গে উচ্চারিত হয়। এটি কেবল রাজনৈতিক পরিসরে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা সরকার, নাগরিক সমাজ এবং ব্যবসায়ী মহলে বিস্তৃত। এই ধরনের 'সফট পাওয়ার' কৌশলগতভাবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যবহার করা হচ্ছে।

 পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, গত এক বছরে বাংলাদেশ একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও বাস্তবমুখী পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করেছে। এই নীতিতে জাতীয় স্বার্থ ও পারস্পরিকতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “যদি আমরা ভারতকে কিছু দিই, তাহলে আমি আশা করব আমরা ভারতের কাছ থেকেও সমপরিমাণ বা তার চেয়েও বেশি কিছু পেতে পারব।” এই ‘বাংলাদেশ-কেন্দ্রিক’ কৌশল শুধু ভারতের ক্ষেত্রে নয়, সব দেশের সঙ্গেই প্রযোজ্য।

 আগের সরকারের মতো বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করছে। তবে তৌহিদ বলেন, কিছু জটিলতা এখনো রয়ে গেছে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সাম্প্রতিক কিছু চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা এবং স্থলবন্দর সংক্রান্ত অমীমাংসিত বিষয়।

তিনি উল্লেখ করেন, সম্প্রতি দুটি ক্ষেত্রে লক্ষণীয় হ্রাস দেখা গেছে—ভারতের দিকে ক্রস-বর্ডার কেনাকাটা এবং চিকিৎসা ও পর্যটনের জন্য ভ্রমণ। তিনি এটিকে বাংলাদেশের জন্য ক্ষতি হিসেবে দেখেন না। বরং তিনি মনে করেন, চিকিৎসা পর্যটন কমে যাওয়ায় দেশের বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোর রোগীর সংখ্যা বেড়েছে, যা দেশের স্বাস্থ্য খাতের জন্য একটি ইতিবাচক অগ্রগতি।