সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

শহীদ আবু সাঈদের বাবা: ছেলের আত্মদানে দেশ মুক্ত হয়েছে

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ৫, ২০২৫, ১০:৫৮ এএম

শহীদ আবু সাঈদের বাবা: ছেলের আত্মদানে দেশ মুক্ত হয়েছে

ছবি- সংগৃহীত

গত বছরের ৫ আগস্টের ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদের পৈতৃক নিবাস পীরগঞ্জের বাবনপুর গ্রামের জাফরপাড়ায় তার বাবা মকবুল হোসেন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “আমার ছেলের আত্মদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ জালিম সরকারের হাত থেকে মুক্ত হয়েছে। আর দেশের মানুষ, যাদের আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো, বিনাবিচারে কারাগারে আটক রাখা হয়েছিল, তারা মুক্তি পেয়েছে।” ছেলের কবরের পাশে বসে তিনি এ কথা বলেন।


 গত বছরের ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মকবুল হোসেন ও তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, জনগণের হাসিমুখগুলো দেখে তারা সন্তান হারানোর বেদনা ভুলে যান। মকবুল হোসেন বলেন, “আন্দোলনের স্রোতে রেহাই পায়নি স্বৈরশাসক। পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। দেশের মানুষ মুক্তি পেয়েছে।” তিনি মনে করেন, তার ছেলে বৈষম্যহীন সমাজে চাকরি পাওয়ার জন্য আন্দোলন করে জীবন দিয়েছে, এবং এটি একটি ন্যায্য দাবি ছিল।

 তবে তারা মনে করেন, সমাজ থেকে এখনো বৈষম্য দূর হয়নি। মনোয়ারা বেগম বলেন, “এখনো আবু সাঈদের স্বপ্ন পূরণ হয়নি।” তিনি চান, তার সন্তানের স্বপ্ন, অর্থাৎ সমাজের সব বৈষম্য দূর করার লড়াই যেন বর্তমান সরকার তার জীবদ্দশায় বাস্তবায়ন করে।

মকবুল হোসেন আরও বলেন, “স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে বর্তমান সরকারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে—এটাই বড় বাধা। তাই কোনো কিছু ঠিকমতো করতে পারছে না সরকার। দেশটা এখন ভালো যাচ্ছে না।” তিনি মনে করেন, হাসিনার দোসররা তার নির্দেশে দেশের শান্তিশৃঙ্খলা নষ্ট করছে এবং এ কারণে সরকারের ভালো উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।

 আবু সাঈদের হত্যাকারীদের বিষয়ে মকবুল হোসেন বলেন, “যে পুলিশ সদস্য আমার ছেলের বুকে গুলি চালিয়েছে, যারা এখনো গ্রেফতার হয়নি, তাদের আইনের আওতায় এনে এই হত্যার জন্য ফাঁসি দেখতে চাই।”

সরকারি সহযোগিতার বিষয়ে তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “এক বছর পার হলেও সরকারিভাবে উল্লেখযোগ্য কোনো সাহায্য পাইনি। সবাই আসে আর শুধু প্রতিশ্রুতি দেয়। কোনো কাজ হয় না।”