আগস্ট ৬, ২০২৫, ১১:২২ এএম
৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। এই ভাষণে তিনি দেশের আইনগত ও প্রশাসনিক সংস্কারের বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেন। দীর্ঘদিন ধরে নাগরিকদের নিরাপত্তা ও আইনি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে যেসব উদ্বেগ ছিল, তার সমাধানে কিছু পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন, যা বাংলাদেশের বিচার ও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আইনগত সংস্কার সম্পন্ন করেছে, যা নাগরিকদের হয়রানি কমাবে এবং পুলিশের জবাবদিহিতা বাড়াবে। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে 'জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস' উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এই ঘোষণা দেন।
ড. ইউনূস জানান, সরকার সম্প্রতি 'ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন অধ্যাদেশ, ২০২৫' অনুমোদন করেছে। এই সংশোধনের ফলে এখন থেকে কোনো ব্যক্তিকে আটকের পর ১২ ঘণ্টার মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব তার পরিবারকে জানাতে হবে। তিনি আরও বলেন, আটককৃত ব্যক্তিকে আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগও দিতে হবে।
এছাড়াও, রিমান্ডে থাকা কোনো ব্যক্তি অসুস্থ বা আহত হলে ডাক্তার কর্তৃক তাকে পরীক্ষা করতে হবে এবং আঘাতের কারণ নিশ্চিত করতে হবে। যদি এর পেছনে পুলিশের কোনো দায় থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার বিধানও এই আইনে যুক্ত করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই সংস্কারের মাধ্যমে গ্রেপ্তার ও আটক নিয়ে মানুষের হয়রানি অনেক কমে আসবে এবং বিচারের কাজ দ্রুততর হবে।
পুলিশ সংস্কারের বিষয়ে ড. ইউনূস জানান, পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, এখন থেকে দেশের সব থানায় অনলাইনে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা যাবে। জিডি গ্রহণ করা ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে থানা থেকে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে থানায় জিডি না নেওয়ার অভিযোগ আর থাকবে না।
প্রধান উপদেষ্টার এই ঘোষণাগুলো দেশের বিচার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।