আগস্ট ১০, ২০২৫, ০১:২৭ পিএম
অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ মোকাবিলায় সরকার বিভিন্ন সময়ে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। এর মধ্যে ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) অন্যতম, যা শহরের ভবন নির্মাণ ও ভূমি ব্যবহারের নিয়মাবলী নির্ধারণ করে। কিন্তু ২০২২ সালে ড্যাপ কার্যকর হওয়ার পর থেকেই আবাসন খাত থেকে এটি সংশোধনের দাবি উঠে আসছিল। আবাসন ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, বর্তমান ড্যাপের ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর) অনেক কম, যা বহুতল ভবন নির্মাণকে নিরুৎসাহিত করছে। তাদের এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ড্যাপ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে, যার ফলে কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় এফএআর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি ঢাকাবাসীর জন্য নতুন ফ্ল্যাটের দাম কমানো এবং আবাসন সংকট নিরসনে সহায়ক হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
রাজধানী ঢাকার ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। নতুন এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঢাকার কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর) বর্তমানের চেয়ে সর্বোচ্চ দ্বিগুণ পর্যন্ত বাড়ানো হবে। ফলে এখন থেকে এসব এলাকায় কম জমিতেও আরও বেশি উচ্চতার ভবন নির্মাণ করা সম্ভব হবে।
রাজউক সূত্রে জানা গেছে, সংশোধিত ড্যাপের অধীনে পুরো ঢাকাকে ৬৫টি জনঘনত্ব ব্লকে ভাগ করে নতুন করে এফএআর নির্ধারণের কাজ চলছে। রবিবার (১০ আগস্ট) ড্যাপের এই সংশোধনী এবং ‘ঢাকা ইমারত বিধিমালা-২০২৫’ চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব), বাংলাদেশ ইনস্টিটিউশন অব প্ল্যানার্স (বিআইপি), রাজউক ও অন্যান্য উপদেষ্টা পরিষদের মতামত নিয়ে একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে।
রাজউকের একজন কর্মকর্তা জানান, আবাসন ব্যবসায়ী এবং জমির মালিকদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবং শহরের ভবিষ্যৎ চাহিদা বিবেচনা করে এফএআর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে, ছোট প্লটে বেশি আয়তনের ভবন নির্মাণ সম্ভব হবে, যা ফ্ল্যাটের দাম কমাতেও সহায়তা করতে পারে।
তবে নগর পরিকল্পনাবিদরা এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, শুধুমাত্র ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এই ধরনের পরিবর্তন নগরের ভবিষ্যতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তারা আরও বলেন, যেকোনো নীতিমালা সবার স্বার্থ মাথায় রেখে করা উচিত, কেবল কিছু সুবিধাভোগীর জন্য নয়।
নতুন নীতিমালায় ‘সেটব্যাক এরিয়া’ বা প্লটের ফাঁকা রাখার অংশ ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি, আলো-বাতাস নিশ্চিত করতে দুটি ভবনের মধ্যে ন্যূনতম ৭২ ডিগ্রি কৌণিক দূরত্ব রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে আবাসন ব্যবসায়ীরা এই মান আরও শিথিল করার দাবি জানাচ্ছেন।