আগস্ট ১০, ২০২৫, ০৩:২৭ পিএম
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন ঘোষণা করেছেন যে, কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ১০ তলা ভবন খুব দ্রুত নির্মাণ করা হবে এবং এটি আধুনিক তুরস্কের দৃষ্টিনন্দন মসজিদগুলোর আদলে তৈরি হবে। তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যতদিন আছে, নির্বাচনের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি নিজে এসে পাগলা মসজিদ ও ইসলামিক কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে যাবেন। এই প্রত্যাশার কথা তিনি আজ রবিবার (১০ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানান। এর আগে সকাল ৯টায় তিনি সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া এলাকায় জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
মাজারে কিছু হামলার বিষয়ে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট আছে। তিনি আন্তঃমন্ত্রণালয় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করেন যে, প্রতি মাসেই এ বিষয়ে আলোচনা হয়। তিনি মাজার এবং মসজিদ কর্তৃপক্ষকে সিসি ক্যামেরা বসানোর অনুরোধ জানিয়ে বলেন, "কোনো দুর্বৃত্ত যদি মাজারে, মসজিদে হামলা চালায় তাহলে তাকে চিহ্নিত করা সহজ হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় মামলা হয়েছে এবং কিছু মানুষকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "সামাজিক সচেতনতা লাগবে। প্রতিটি মাজারে পুলিশ নিয়োগ করব কীভাবে, এত ফোর্স তো আমাদের নেই। সামাজিক সচেতনতা লাগবে, সর্বস্তরের মানুষ আমরা মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা, মাজার এগুলো আমরা পাহারা দেব। কেউ যদি এখানে হামলা চালায় অথবা ধ্বংস করার পায়তারা করে তাকে আমরা আইনের আওতায় আনব। স্পেসিফিক মামলা হলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আইনের আওতায় আনবে।"
ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের বিপুল তহবিলের বিষয়ে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, মসজিদের ৯০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এফডিআর করে রাখা আছে। সেখান থেকে নিয়মিত লভ্যাংশ পাওয়া যায়। ইসলামিক স্কলার ও মুফতি সাহেবদের পরামর্শক্রমে এই লভ্যাংশের টাকা মসজিদে খরচ করার বিধান নেই। এটি গরিব, দুঃখী, অনাথ এবং অসুস্থ অসহায়দের মধ্যে বিতরণ করতে হয়। ইতোমধ্যে পাগলা মসজিদের লভ্যাংশ থেকে প্রায় ৮০ লাখ টাকা এ সব মানুষকে দেওয়া হয়েছে। তিনি আজ আরেকটি প্রস্তাব করেছেন যে, স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা দরিদ্র ছাত্র আছে, তাদের পড়াশোনার খরচ ও জামাকাপড় কেনার জন্য এই লভ্যাংশ থেকে দেওয়া হোক। তার মতে, "এটা একটা বিরাট কাজ হবে। এতে আমাদের চোখ খুলে যাবে।"
পাগলা মসজিদ পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইমরানুল ইসলাম, আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা শিব্বির আহমদসহ পাগলা মসজিদ কমিটির সদস্যরা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে তিনি আল জামিয়াতুল এমদাদিয়া কর্তৃক আয়োজিত ‘ইসলামী অর্থনীতির গুরুত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।