আগস্ট ২৪, ২০২৫, ১০:০৯ এএম
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আসছে। এখন থেকে সেনাবাহিনী শুধু 'স্ট্রাইকিং ফোর্স' হিসেবে নয়, বরং অন্যান্য বাহিনীর মতো ম্যাজিস্ট্রেসি ও পুলিশি ক্ষমতা নিয়ে নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবে। এজন্য গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) সংশোধন করে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে প্রস্তাব পাঠাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই পরিবর্তনের ফলে সেনাবাহিনী স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমান আল-মাছউদ।
নির্বাচন কমিশনার মাছউদ বলেন, "আমরা আরপিও সংশোধন করে সেখানে ল’এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি হিসাবে সেনাবাহিনীকেও অন্তর্ভুক্ত করেছি। আগে শুধু পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিজিবি ছিল। এখন সেনাবাহিনীকেও অন্তর্ভুক্ত করা হলো।" তিনি জানান, এই প্রস্তাব এই সপ্তাহের মধ্যেই সরকারের কাছে পাঠানো হবে।
১৬ বছর আগে আরপিও থেকে সেনাবাহিনীকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন মনে করে, আসন্ন নির্বাচনে সেনাবাহিনী পূর্ণ ক্ষমতায় দায়িত্ব পালন করলে ভোটারদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে।
সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, এই সংশোধনী হলে নির্বাচনের দায়িত্ব পাওয়া সেনা সদস্যরা ম্যাজিস্ট্রেসি এবং পুলিশের ক্ষমতা একসঙ্গে পাবে। আগে তাদের ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদনের ওপর নির্ভর করতে হতো, কিন্তু এখন তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে। তিনি বলেন, "নির্বাচনে অনেক সময় স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব থাকে। কিন্তু সেনাবাহিনীর ওপর সেই ধরনের প্রভাব বিস্তার করা কঠিন।"
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদও মনে করেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনী নিয়োগ অপরিহার্য। তিনি বলেন, "সেটা শুধু স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে নয়, পূর্ণ ক্ষমতা দিয়ে তাদের নির্বাচনি দায়িত্ব দিতে হবে।"
নির্বাচন কমিশনার মাছউদ আরও বলেন, "নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে এক ধরনের আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। আমরা মনে করেছি তাই শুধু জাতীয় নির্বাচনে নয়, সব নির্বাচনেই সেনাবাহিনী থাকা দরকার।" তিনি জানান, কমিশন সর্বসম্মতভাবে এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। এর ফলে নির্বাচন কমিশন অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মতো সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করে তাদের সহায়তা চাইতে পারবে।