আগস্ট ১১, ২০২৫, ০১:৩৩ পিএম
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে প্রশাসন, যাতে তারা জাতিকে একটি শ্রেষ্ঠ ও গৌরবময় নির্বাচন উপহার দিতে পারে। এই লক্ষ্য অর্জনে প্রশাসনের প্রতিটি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ।
রবিবার (১০ আগস্ট, ২০২৫) সন্ধ্যায় ঢাকার অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জাতীয় নির্বাচনে জনপ্রশাসনের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ডা. জাহেদ উর রহমান এবং যুগান্তরের উপসম্পাদক বি এম জাহাঙ্গীর। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সভাপতি এ বি এম আবদুস সাত্তার। আলোচনা সভায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. এ এস এম সালেহ আহমেদ সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ক্লাবের সিনিয়র সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভার শুরুতে জুলাই আন্দোলনের একটি সচিবদের প্রতিবেদন দেখানো হয়।
সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ বলেন, "জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের আমরা ভুলে গেছি। আমরা সহজেই ভুলে যাই অনেক কিছু। এ দেশের মানুষ অনেক কিছুই ভুলে থাকতে চায়। ৯০ এর গণ-অভ্যুত্থানের অনেক কিছুই আমরা কাজে লাগাতে পারিনি।"
তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশের প্রশাসন একটি খারাপ সময়ের মধ্যে দিন পার করছে। চাইলেই সব কিছু হয় না। তারপরও সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। জাতিকে একটি গৌরবময় নির্বাচন উপহার দিবে প্রশাসন। এ জন্য সবাইকে প্রস্তুতি নিতে হবে।"
স্বাগত বক্তব্যে অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্য বিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সভাপতি এ বি এম আবদুস সাত্তার বলেন, "বাংলাদেশের ইতিহাসে চারটি (১৯৭৯, ৯১, ৯৬, ২০০১) নির্বাচন ছাড়া বাকি ৮টি নির্বাচন নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। বিশেষ করে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ এর নির্বাচনকে কেউ নির্বাচন বলে না। ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে এই তিনটি নির্বাচনে যারা জড়িত ছিল তাদের অনেকে এখনো প্রশাসনে কর্মরত আছেন।" তিনি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে অনুরোধ করেন, "আপনারা ফ্যাসিস্ট হাসিনার সুবিধাভোগী কর্মকর্তা যারা প্রশাসনকে কুলষিত করেছে, নষ্ট করেছে তাদের চাকরি থেকে বের করে দেবেন। তাদের আর প্রশাসনে চাকরি করার নৈতিক অধিকার নেই। তারা চাকরিতে থাকলে আগামী নির্বাচনে স্যাবোটাজ করতে পারে।"
বাংলাদেশ এডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএএসএ) মহাসচিব ও ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেন, "একটি চেতনা ধারণ করেই জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছে। প্রশাসনের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। অস্বীকার করার কিছু নেই। আমাদের অনেক কর্মকাণ্ডও বির্তকিত আছে। আমাদের অনেক দায় আছে। আমাদের যারা পরিচালিত করেন তাদের কী কোনো দায় নেই? আমরা নিরপেক্ষভাবে কাজ করার সুযোগ চাই। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব মহলের সহযোগিতা চাই। সবার সহযোগিতা পেলে নিশ্চয় সুন্দর একটি নির্বাচন করা সম্ভব।"