সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করলেন প্রধান উপদেষ্টা

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ৫, ২০২৫, ০৭:০৩ পিএম

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করলেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি- সংগৃহীত

২০২৪ সালের জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান তৎকালীন সরকারের পতন ঘটায় এবং একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্রসমাজ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করা হয়।

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ: সাংবিধানিক স্বীকৃতির প্রতিশ্রুতি

ঢাকা: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করেছেন। মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এক জমকালো অনুষ্ঠানে তিনি এই ঐতিহাসিক ঘোষণাপত্রটি পাঠ করেন। এসময় বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ঘোষণাপত্র প্রকাশের সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান ২০২৪"-কে উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হবে। তিনি আরও জানান, পরবর্তী নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারের সংস্কার করা সংবিধানের তফসিলে এই ঘোষণাপত্র সন্নিবেশিত থাকবে।

শহীদদের জাতীয় বীর ঘোষণা

ঘোষণাপত্রে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সকল শহীদকে ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এতে শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত যোদ্ধা এবং আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতাকে প্রয়োজনীয় সকল আইনি সুরক্ষা দেওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করা হয়েছে। ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, “৫ আগস্ট ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ী বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে এই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা হলো।”

আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার

এই ঘোষণাপত্রে দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণের জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • যুক্তিসঙ্গত সময়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন।

  • নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনা।

  • আইনের শাসন ও মানবাধিকার নিশ্চিত করা।

  • দুর্নীতি, শোষণমুক্ত, বৈষম্যহীন ও মূল্যবোধসম্পন্ন সমাজ প্রতিষ্ঠা।

  • একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা।

এই ঘোষণাপত্রকে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জন্ম নেওয়া নতুন বাংলাদেশের রূপরেখা হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এটি দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোর ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।