সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫, ১০:১৮ এএম
আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য ৬০টি বিলাসবহুল গাড়ি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। প্রতিটি গাড়ির দাম ধরা হয়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা, যার ফলে মোট খরচ হবে ১০২ কোটি ৬১ লাখ টাকা। একই সাথে, নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালনের জন্য ১৯৫টি জিপ ও ২৫টি মাইক্রোবাসসহ মোট ২২০টি গাড়ি কেনা হচ্ছে, যার মোট ব্যয় ৩৪৩ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ২৮০টি গাড়ি কিনতে সরকারের মোট খরচ ৪৪৫ কোটি টাকা।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত ২১ আগস্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ে এই প্রস্তাব পাঠায় এবং প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ায় এই গাড়িগুলো কেনা হবে। তবে এই সিদ্ধান্তটি চলতি বছর ৮ জুলাই জারি করা একটি সরকারি পরিপত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ওই পরিপত্রে বলা হয়েছিল, পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সব ধরনের নতুন যানবাহন কেনা বন্ধ থাকবে। যদিও সরকারি গাড়ি ১০ বছরের বেশি পুরনো হলে নতুন গাড়ি কেনার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু পরিবহন পুলের তথ্য অনুযায়ী, মন্ত্রীদের জন্য কেনা গাড়িগুলো ৯ বছরের পুরনো।
এই সিদ্ধান্তের ফলে পরবর্তী সরকার বা মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার এখতিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের আছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, "পরবর্তী সরকারের জন্য গাড়ি কেনার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারকে কে দিয়েছে? এটি অবিলম্বে বাতিল করা উচিত।" অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় এবং অর্থ সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ৬ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এই গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) জন্য ১৯৫টি জিপ এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জন্য ২৫টি মাইক্রোবাস কেনা হচ্ছে। এসব গাড়ির মোট মূল্য ৩৪৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এই কেনাকাটায় চলতি অর্থবছরের বাজেটের অতিরিক্ত প্রায় ৯৬ কোটি টাকা অন্য খাত থেকে ব্যয় করার অনুমোদনও দিয়েছে অর্থ বিভাগ।