রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

মুমূর্ষু ব্যক্তির পাশে বসে যে আমল করবেন

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২৬, ২০২৫, ০২:৪০ পিএম

মুমূর্ষু ব্যক্তির পাশে বসে যে আমল করবেন

ছবি- সংগৃহীত

মৃত্যু প্রতিটি মানুষের জীবনের এক অনিবার্য বাস্তবতা। ইসলামে এই কঠিন সময়টিকে সহজ ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যখন কোনো ব্যক্তি মুমূর্ষু অবস্থায় থাকেন, তখন তার পাশে থাকা পরিবারের সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা উচিত, যাতে তার শেষ সময়টি আল্লাহর স্মরণ এবং প্রশান্তিতে কাটে। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এই আমলগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।

 জীবন ও মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা একজন মুমূর্ষু ব্যক্তির পাশে তার পরিবার ও নিকটাত্মীয়দের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা উচিত। ইসলামে এই সময়টিকে অত্যন্ত সংবেদনশীল হিসেবে দেখা হয় এবং কিছু নির্দিষ্ট আমলের মাধ্যমে ব্যক্তির মৃত্যু সহজ ও সুন্দর করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।






মুমূর্ষু ব্যক্তির পাশে বসে বেশি বেশি 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ' এর তালকিন করা উচিত। হাদিসে এর গুরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে মুমূর্ষূদের ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর তালকিন দাও।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৯৯৫)।

কালেমার তালকিন অর্থ হলো, তার পাশে একটু আওয়াজ করে কালেমা পড়তে থাকা, যাতে তিনি শুনতে পান এবং আল্লাহর কথা স্মরণ করতে পারেন। তবে, এই অবস্থায় তাকে জোর করে বা বারবার মুখে উচ্চারণ করে কালেমা পড়ার আদেশ দেওয়া যাবে না। এর পরিবর্তে তাকে শান্তিপূর্ণভাবে কালেমা শোনার সুযোগ করে দেওয়া উচিত।

মুমূর্ষু ব্যক্তির পাশে বসে পবিত্র কোরআনের সূরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। হাদিসে এই আমলের বিশেষ ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মাকাল ইবনে ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমরা তোমাদের মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির নিকট ’সূরা ইয়াসিন’ পাঠ করবে।” (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৩১০৭)।

সূরা ইয়াসিন তেলাওয়াতের মাধ্যমে মুমূর্ষু ব্যক্তির আত্মা প্রশান্তি লাভ করে এবং মৃত্যুর যন্ত্রণা লাঘব হয় বলে মনে করা হয়।

মুমূর্ষু ব্যক্তির পাশে কান্নাকাটি করা বা উচ্চস্বরে কথা বলা থেকে বিরত থাকা উচিত। এর পরিবর্তে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা উচিত, যা শান্ত ও ইতিবাচক। তার সামনে জীবনের প্রতি হতাশা বা দুঃখ প্রকাশ না করে আল্লাহর প্রতি ভরসা এবং ক্ষমা প্রার্থনার কথা বলা যেতে পারে।

ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে, এই আমলগুলো ব্যক্তির ঈমানকে শক্তিশালী করে এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে মুমূর্ষু ব্যক্তি তার জীবনের শেষ মুহূর্তেও আল্লাহর স্মরণে থাকতে পারেন।