রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

ঝালকাঠির নিম্নাঞ্চলে পানি, বন্যার শঙ্কায় স্থানীয়রা

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২৬, ২০২৫, ০৩:০৮ পিএম

ঝালকাঠির নিম্নাঞ্চলে পানি, বন্যার শঙ্কায় স্থানীয়রা

ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো প্রায়শই নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার জোয়ারের কারণে সৃষ্ট বন্যা এবং জলাবদ্ধতার ঝুঁকিতে থাকে। ঝালকাঠি জেলা, যেখানে সুগন্ধা, বিষখালী ও ধানসিঁড়ির মতো বড় নদীগুলো প্রবাহিত হয়, সেখানে বর্ষাকালে এমন পরিস্থিতি নতুন নয়। সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট একটি নিম্নচাপের প্রভাবে জেলার নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয়দের মধ্যে নতুন করে বন্যার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ঝালকাঠির বিভিন্ন নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জেলার চারটি উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। প্রবল স্রোতে নদীর পানি খাল ও তীর উপচে গ্রামাঞ্চলে প্রবেশ করায় দেখা দিয়েছে বন্যার শঙ্কা।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, সুগন্ধা, বিষখালী, হলতা, বাসন্ডা, ধানসিঁড়ি নদী এবং গাবখান চ্যানেলের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এসব নদীর পানির উচ্চতা বেড়েছে ২-৩ মিটার। ইতোমধ্যে জেলার ৪০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

বিশেষভাবে ঝালকাঠি সদরের কেওড়া, কৃত্তিপাশা, পোনাবালিয়া ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রাম; রাজাপুরের বড়ইয়া, নিজামিয়া, পালট, বাদুরতলা; নলছিটির নাচনমহল ও ভবানিপুর এবং কাঁঠালিয়ার আমুয়া ও পাটিকালঘাটা এলাকার ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

বিষখালীর জোয়ারের পানি সদর উপজেলার বৈদারাপুর, ভাটারাকান্দা, সাচিলাপুর, কিস্তাকাঠি, মানকিসুন্দর, নাপিতেরহাট এবং কাঁঠালিয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে প্রবেশ করেছে। কাঁঠালিয়ার চিংড়াখালী, জয়খালী, মশাবুনিয়া, ছৈলারচর, কচুয়া, রঘুয়ারদরি চর ও জাঙ্গালিয়া গ্রাম সম্পূর্ণ পানির নিচে। আউরা ও শৌলজালিয়া আশ্রয়ণ এলাকা, কাঁঠালিয়া গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরও ডুবে গেছে।

এতে কৃষিজমি, মাছের ঘের এবং কাঁচা-পাকা সড়কের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়াও ঝালকাঠি শহরের পুরাতন কলাবাগ, লঞ্চঘাট ও পৌর মিনিপার্ক এলাকা থেকেও সুগন্ধা নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশা বলেন, "শুধুমাত্র বিষখালী নদীর পানির উচ্চতা গত ২৪ ঘণ্টায় ২ মিটার বেড়েছে। বর্তমানে পানি বিপৎসীমার ৭ থেকে ১০ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে।"

জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান বলেন, "পানি আরও বাড়লে প্লাবিত এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।"