আগস্ট ৩, ২০২৫, ০১:০৪ পিএম
দেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশনে ছাপানো প্রত্যয়নপত্রে সাধারণত আবেদনকারীকে 'ব্যক্তিগতভাবে চেনা', 'সমাজ বা রাষ্ট্রবিরোধী কাজে জড়িত নন' এবং তার 'সার্বিক মঙ্গল কামনা'র মতো ইতিবাচক বাক্য লেখা থাকে। কিন্তু এই প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে গিয়ে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়ন পরিষদে এক ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে। চেয়ারম্যান ছাইদুল ইসলাম বাবুল শরিফ মিয়া নামের এক যুবককে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন।
সেই প্রত্যয়নপত্রে লেখা রয়েছে:
"স্থানীয় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আব্দুল বারেকের ছেলে মো. শরিফ মিয়া (২২)। আমার জানা মতে তিনি ইতিপূর্বে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করতে না পেরে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন। তিনি একজন দুষ্কৃতকারী এবং দুশ্চরিত্রের। তাছাড়া কিছুদিন আগে তিনি চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। তিনি সামাজিক বা আইনের কোনো তোয়াক্কা করেন না। আমি তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।"
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ১৩ জুন এলাকার চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে বাড়িতে একা পেয়ে ধর্ষণ করেন শরিফ মিয়া। পরে গুরুতর অবস্থায় শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই ঘটনায় থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় গত শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার একটি এলাকা থেকে র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় সোপর্দ করে। এর আগে গত সপ্তাহে শরিফ মিয়াকে 'ধর্ষক' হিসেবে প্রত্যয়নপত্র দেন ইউপি চেয়ারম্যান।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান ছাইদুল ইসলাম বাবুল হোসেন বলেন, "প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার সময় আমরা স্বভাবতই ভালো কিছু লিখে দিই। এ অবস্থায় খারাপ লোকটাও সমাজে ভালো প্রত্যয়নপত্র পেয়ে যান। কিন্তু একটু যাচাই-বাছাই করে দিলে অপরাধীর মনে একটা ভয় কাজ করতে পারে। সেই বিবেচনায় এবার বাস্তব ঘটনাকেই সামনে এনে প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয়েছে।"
চেয়ারম্যানের এই সাহসী পদক্ষেপ সমাজের অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িত ব্যক্তিদের প্রতি প্রচলিত প্রত্যয়নপত্র প্রদানের পদ্ধতিতে একটি নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং এটি অপরাধ দমনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।