মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২
বন্যার শঙ্কা

উজানের ঢলে পানি বাড়ছে তিস্তায়, লালমনিরহাটে বন্যার শঙ্কা

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২১, ২০২৫, ০২:০২ পিএম

উজানের ঢলে পানি বাড়ছে তিস্তায়, লালমনিরহাটে বন্যার শঙ্কা

ছবি- সংগৃহীত

উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে, যা তিস্তা পাড়ের নিম্নাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা তৈরি করেছে। এতে শতাধিক চরের মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ফসলের ক্ষেত তলিয়ে যেতে শুরু করেছে।

দৈনিক ইত্তেফাকের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি সোমবার (২১ জুলাই) সকাল ১০টায় জানিয়েছেন, সকাল ৯টায় কুড়িগ্রাম পয়েন্টে তিস্তার পানি ২৯ দশমিক ৯ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার বিপদসীমা হলো ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ, পানি বিপদসীমার খুবই কাছাকাছি অবস্থান করছে।

তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশের সবচেয়ে বৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে ৪৪টি জলকপাটই খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ডালিয়া ব্যারেজের লেভেল পরিমাপক নুরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাত থেকে পানি বাড়তে শুরু করেছে এবং পানির চাপ বাড়তে থাকায় সব গেট খুলে রাখা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাস অনুযায়ী, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা এই নদীগুলোর পানির সমতল আরও বৃদ্ধি পেতে পারে এবং পরবর্তী দুই দিন স্থিতিশীল থাকতে পারে।

পাউবো কুড়িগ্রামের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা অববাহিকায় ১৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। রোববার সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত তিস্তার পানি রংপুরের কাউনিয়া গেজ স্টেশনে ১৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পায়। ওই সময় পর্যন্ত পানি বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের কিছু ঘরবাড়ি ও কৃষি জমি প্লাবিত হতে পারে, তবে তা স্বল্পমেয়াদি হবে।

এদিকে, লালমনিরহাটে ইতোমধ্যে নিম্নাঞ্চল ও ধানক্ষেত তলিয়ে গেছে বলে জানা যায়। গত রোববার সন্ধ্যা ৬টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অবস্থিত তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তিস্তা তীরবর্তী চতুরা এলাকার বাসিন্দা মিলন বলেন, "পানি কিছুটা বাড়ছে, তবে বন্যা হওয়ার মতো বাড়েনি।" অন্যদিকে, গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নুর ইসলাম জানান, রোববার সকালে টানা বৃষ্টি হয়েছে এবং উজান থেকেও প্রচুর পানি আসছে। ইতোমধ্যে নিচু এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, উজান থেকে পানি আসার পাশাপাশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর ফলে নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করছে। তারা সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।