আগস্ট ৫, ২০২৫, ০৪:৫৬ পিএম
গত কয়েক দিন ধরে রাঙামাটি ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাত এবং উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে হ্রদের পানি ধারণক্ষমতা বিপদসীমা অতিক্রম করে গেছে, যা বাঁধের সুরক্ষার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এই পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা পার্শ্ববর্তী নদী ও নিম্নাঞ্চলে বন্যার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানির ধারণক্ষমতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় বাঁধের চাপ কমাতে ১৬টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ১০ মিনিটে কাপ্তাই বাঁধের স্পিলওয়ের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খোলা হয়। এতে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশিত হচ্ছে।
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ ছিল ১০৮.১২ ফুট মিন সি লেভেল (এমএসএল)। হ্রদের সর্বোচ্চ পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। যখন হ্রদে পানির পরিমাণ ১০৮ এমএসএল অতিক্রম করে, তখন তাকে বিপদসীমা হিসেবে ধরা হয়। এই পরিস্থিতি বিবেচনা করেই বাঁধের সুরক্ষায় পানি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মাহামুদ হাসান জানান, "পানির চাপ বাড়ায় বাঁধের স্পিলওয়ের ১৬টি গেট দিয়ে মঙ্গলবার রাত ১২টা ১০ মিনিটে ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি বের হয়ে কর্ণফুলী নদীতে পড়ছে।"
তিনি আরও বলেন, পানি ছাড়ার পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট চালু রেখে ২২০ থেকে ২২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৩২ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে পড়ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২৩০ মেগাওয়াট।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পানি ছাড়ার পরেও সর্বোচ্চ ১০৯ এমএসএল পর্যন্ত পানি ধরে রাখার চেষ্টা করা হবে। তবে যদি বৃষ্টিপাত, পাহাড়ি ঢল এবং উজানের পানির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পায়, তবে স্পিলওয়ে দিয়ে পানি ছাড়ার পরিমাণ বাড়ানো বা কমানো হতে পারে।
সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেলে এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ কর্ণফুলী নদী তীরবর্তী জনগণকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছে। এটি মূলত ১৯৬০ সালে কর্ণফুলী নদীর ওপর নির্মিত একটি কৃত্রিম বাঁধ, যা বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি বন্যা নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে।