জুলাই ১৯, ২০২৫, ১২:১২ পিএম
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলের একটি গোরস্থান থেকে কবর খুঁড়ে ১০টি কঙ্কাল চুরির চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই, ২০২৫) রাতে উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নের গোগর গ্রামের ঢাকাডাঙ্গী গোরস্থানে এই অপরাধ সংঘটিত হয়। শুক্রবার দুপুরে স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
গোগর ঢাকাডাঙ্গী গোরস্থানের সভাপতি সাদেকুল ইসলাম ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, স্থানীয় বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে তার বাবার কবর জিয়ারত করতে আসেন। গত শুক্রবারও তিনি যথারীতি বাবার কবর জিয়ারত করতে এসে দেখেন কবরের মাটি খোঁড়া এবং বাঁশের চাটাই সরানো।
পাশে থাকা আরও কয়েকটি কবরের মাটি ও বাঁশের চাটাই সরানো অবস্থায় দেখতে পেয়ে তরিকুল তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়দের বিষয়টি জানান। এরপর স্থানীয়রা এসে ওই কবরগুলোর ভেতরে আলো ফেলে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেন এবং দেখতে পান ১০টি কবরের ভেতরে কোনো কঙ্কাল নেই। এই খবর মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরশেদুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, স্থানীয়দের কাছে জানতে পেরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছে এবং বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। তবে, এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি বলেও জানান ওসি।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, কঙ্কাল চুরির ঘটনা বাংলাদেশে নতুন নয়। অতীতেও এমন ঘটনা ঘটেছে, যার পেছনে মূলত দুটি কারণ থাকতে পারে: প্রথমত, মেডিকেল শিক্ষার্থীদের কাছে কঙ্কালের চাহিদা; দ্বিতীয়ত, কালোবাজারে চড়া দামে কঙ্কাল বিক্রি। এই ধরনের অপরাধ সমাজে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করে, কারণ এটি মানুষের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধে আঘাত হানে। স্থানীয়দের মধ্যে এই ঘটনাকে ঘিরে এক ধরনের ভয় ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে। তারা দ্রুত এই ঘটনার রহস্য উন্মোচন এবং জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলের এই কঙ্কাল চুরির ঘটনা একটি গুরুতর অপরাধ। পুলিশ এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে জড়িতদের শনাক্ত করতে পারবে এবং এমন অমানবিক কাজের পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে, এমনটাই প্রত্যাশা করছেন স্থানীয়রা। এই ঘটনা শুধু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্যই নয়, বরং সামাজিক অস্থিরতার ক্ষেত্রেও এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
আপনার মতামত লিখুন: