বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫, ৯ শ্রাবণ ১৪৩২

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা পদত্যাগ করতে পারেন:

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২৩, ২০২৫, ০১:৪১ পিএম

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা পদত্যাগ করতে পারেন:

ছবি- সংগৃহীত

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা আগামী মাসে পদত্যাগ করতে পারেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্স। সম্প্রতি পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তার নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) ব্যাপক ব্যর্থতার মুখে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন বলে সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। ক্ষমতায় আসার এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ইশিবার সম্ভাব্য এই পদত্যাগ জাপানের রাজনীতিতে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।

আমাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২৩ জুলাই, ২০২৫ তারিখে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে যে, উচ্চকক্ষ নির্বাচনে বড় ধরনের পরাজয়ের কারণেই ইশিবা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে, রাজনৈতিক অস্থিরতা এড়াতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বহু প্রত্যাশিত বাণিজ্য চুক্তি নিশ্চিত করার পরই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন। ১ আগস্টের মধ্যে এই চুক্তির সময়সীমা থাকায়, তিনি কিছুটা সময় নিয়ে এই পদক্ষেপ নিচ্ছেন। মঙ্গলবার ইশিবা ও ট্রাম্প একটি যৌথ চুক্তি ঘোষণা করেন, যেখানে জাপানি গাড়ি আমদানির ওপর শুল্ক কমানোর কথা বলা হয়েছে এবং জাপানকে অন্যান্য পণ্যের ওপর কঠোর শুল্কের হাত থেকে রক্ষা করা হয়েছে।

এলডিপির জন্য বড় ধাক্কা এবং নতুন নেতৃত্ব খোঁজার চ্যালেঞ্জ

ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) জন্য এটি একটি বড় ধাক্কা। ইশিবার পদত্যাগের পর পার্টির নেতৃত্বে পরিবর্তন আসবে এবং একটি নতুন নেতা খুঁজে বের করতে হবে। এই পরিস্থিতি এলডিপির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ, কারণ তাদের জনপ্রিয়তা কমেছে এবং নতুন করে জনসমর্থন অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে জাপানের রাজনীতিতে নতুন কিছু ডানপন্থি দলের উত্থান, বিশেষ করে "জাপান ফার্স্ট" স্লোগানে আত্মপ্রকাশ করা চরম ডানপন্থি সানসেইতো পার্টি এলডিপির জনপ্রিয়তায় বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। গত রোববারের ভোটে ২৪৮ সদস্যের উচ্চকক্ষে সানসেইতো পার্টি এক লাফে এক আসন থেকে ১৪টি আসনে উন্নীত হয়েছে। তারা অভিবাসন হ্রাস, কর কমানো এবং মূল্যস্ফীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।

সংখ্যালঘু সরকার ও সাধারণ নির্বাচনের সম্ভাবনা

গত বছর দলীয় নির্বাচনে কট্টর রক্ষণশীল প্রার্থী সানায়ে তাকাইচিকে পরাজিত করে ইশিবা প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু অক্টোবরের সাধারণ নির্বাচনে এলডিপি নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। এর ফলে ইশিবার উত্তরসূরিকে সংসদের দুই কক্ষেই সংখ্যালঘু অবস্থায় সরকার পরিচালনা করতে হবে।

সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে যে, নতুন প্রধানমন্ত্রী অবিলম্বে দেশটিতে সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করবেন না। বরং, তিনি প্রথমে সংসদের অন্যান্য বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতাদের সমর্থন নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন, যাতে প্রধানমন্ত্রীর পদে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পাওয়া যায়। এরপরই তিনি দলের জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে জনসমর্থন নেওয়ার লক্ষ্যে নির্বাচনের পথে হাঁটবেন। এই পরিস্থিতি জাপানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে কিছুটা অনিশ্চিত করে তুলেছে এবং আগামী মাসগুলোতে দেশটির রাজনীতিতে আরও নাটকীয়তা দেখা যেতে পারে।