সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫, ১১:৪২ পিএম
ভারতের নিরাপত্তা মহল তাদের পাঁচ প্রতিবেশী দেশ—বাংলাদেশ, পাকিস্তান, চীন, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতিকে নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এই পাঁচটি দেশকে 'সরাসরি হুমকি' হিসেবে চিহ্নিত করে নয়াদিল্লির নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ভুটান ও মিয়ানমার ছাড়া বাকি এই দেশগুলোর পরিস্থিতি ভারতের জন্য সরাসরি নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করছে।কলকাতায় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ড সদর দপ্তরে তিন দিনব্যাপী ‘কম্বাইন্ড কমান্ডারস কনফারেন্স’ শুরু হয়েছে, যার উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হলো ‘ইয়ার অব রিফর্মস : ট্রান্সফরমিং ফর দ্য ফিউচার।’ এই সম্মেলনে ভারতের শীর্ষ রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব একসঙ্গে বসে দেশের সামগ্রিক প্রতিরক্ষা কৌশল নিয়ে আলোচনা করছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মনে করছে
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর উগ্রপন্থি তৎপরতা বেড়েছে এবং ভারতবিরোধী বক্তব্য ও কার্যকলাপও দৃশ্যমান হচ্ছে, যা ভারতের জন্য সরাসরি নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করেছে। এক জ্যেষ্ঠ গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশের ফলে পশ্চিমবঙ্গ ও আসামের সীমান্তবর্তী জেলার জনসংখ্যার গঠনে পরিবর্তন আসছে
, যা ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলছে এবং সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বাড়াচ্ছে।পাকিস্তান ও নেপাল নিয়েও ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, পাকিস্তান এখনো জঙ্গি অর্থায়নের মাধ্যমে ভারতের জন্য বড় হুমকি। অন্যদিকে, নেপালে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ক্রমবর্ধমান ভারতবিরোধী মনোভাব আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য বাধা সৃষ্টি করছে।
সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে ভারত চীনকে দেখছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল এবং দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আক্রমণাত্মক ভূমিকাকে সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। লাদাখ, অরুণাচল ও সিকিম সীমান্তে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। শীর্ষ সামরিক নেতৃত্ব মনে করে, সীমান্তে চীনের উপস্থিতি ভারতের জন্য একটি পরোক্ষ কিন্তু বড় বিপদ ডেকে আনছে।
সম্মেলনের মূল লক্ষ্য হলো সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করা, পাকিস্তান ও চীনের সম্ভাব্য হামলা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া এবং একই সঙ্গে বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা। সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, এখন শুধু যুদ্ধের প্রস্তুতি নয়, শান্তিকালীন সময়েও একটি সমন্বিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।