জুলাই ২৪, ২০২৫, ০৬:০৭ পিএম
বৈধ কাগজপত্র ছাড়া সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টা এবং মানবপাচারের ঘটনা আন্তর্জাতিক অভিবাসন ব্যবস্থায় একটি গুরুতর সমস্যা। কাজের সন্ধানে বা উন্নত জীবনের আশায় অনেক সময় মানুষ প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে অবৈধ পথে বিদেশ পাড়ি দিতে চেষ্টা করে, যা প্রায়শই তাদের জন্য বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এমন ঘটনায় অনেক সময় বিদেশি মাটিতে আটক বা নির্যাতনের শিকার হতে হয়। সম্প্রতি পাকিস্তান-ইরান সীমান্তে ৩৩ জন বাংলাদেশি নাগরিকের গ্রেপ্তার তেমনই এক ঘটনার ইঙ্গিত দেয়, যা মানবপাচার চক্রের সক্রিয়তাকেও তুলে ধরে।
বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ইরানে প্রবেশের চেষ্টাকালে পাকিস্তান-ইরান সীমান্তে ৩৩ জন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফআইএ) এবং ফ্রন্টিয়ার কর্পস (এফসি)। গতকাল বুধবার (২৪ জুলাই) তাফরানের কাছে যৌথ অভিযান চালিয়ে এই ৩৩ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
একটি সূত্র জানিয়েছে, বেলুচিস্তান প্রদেশের চাগাই বিভাগের মাসকিল এলাকা দিয়ে এই বাংলাদেশিরা ইরানে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। মাসকিল এলাকাটি একটি নির্জন সীমান্ত এলাকা হিসেবে পরিচিত, যা দিয়ে পাকিস্তান থেকে অনেকেই অবৈধভাবে ইরানে প্রবেশ করে থাকে।
আটককৃত বাংলাদেশিরা গত জুন এবং চলতি জুলাই মাসে বৈধ উপায়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছিলেন। তবে তাদের কাছে ইরানে প্রবেশের কোনো বৈধ কাগজ বা ছাড়পত্র ছিল না। পাক সংবাদমাধ্যম সামা টিভি জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশিরা দলবদ্ধ হয়ে ইরানে ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের থামিয়ে ইরানে যাওয়ার কাগজপত্র চাইলে তারা সেগুলো দেখাতে ব্যর্থ হন।
এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, "৩৩ জনের সবাইকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরবর্তী তদন্তের জন্য কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এফআইএ) কাছে তুলে দেওয়া হয়।" তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এই বাংলাদেশিরা কোনো মানবপাচার চক্রের সদস্য হতে পারেন, যারা সীমান্ত এলাকায় সক্রিয়ভাবে কার্যক্রম চালায়। মানবপাচারকারীরা এসব নিরীহ মানুষকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বিপজ্জনক পথে ঠেলে দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এই ঘটনা আবারও অবৈধ অভিবাসন এবং মানবপাচার চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং আটককৃত বাংলাদেশিদের বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন: