জুলাই ২৬, ২০২৫, ০৭:২২ পিএম
মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাত এই অঞ্চলে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েলের প্রধান মিত্র হিসেবে, তার সামরিক সক্ষমতা বজায় রাখতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। অন্যদিকে, সৌদি আরব যদিও ইরানের সঙ্গে তার বৈরিতা আছে, তারপরও ফিলিস্তিন ইস্যুসহ নানা কারণে ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি সামরিক সহায়তা প্রদানে সতর্ক অবস্থান নেয়। সম্প্রতি ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে সৌদি আরব এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছে।
ইরানের অব্যাহত ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মুখে যখন ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে আসছিল, তখন তাদের সহায়তা করতে সৌদি আরবকে প্রস্তাব দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রভাবশালী এই দেশটি সঙ্গে সঙ্গেই সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। সংবাদমাধ্যম মিডেল ইস্ট আই শুক্রবার (২৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে আকস্মিক হামলা চালানোর পর ইরানও দখলদারদের লক্ষ্য করে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে। নিজেদের এবং যুক্তরাষ্ট্রের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে ইসরায়েল সেগুলো ভূপাতিত করার চেষ্টা করে। কিন্তু ইরানের হামলার তীব্রতায় ইসরায়েলিদের ‘থাড’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেপণাস্ত্র প্রায় ফুরিয়ে আসছিল।
এই পরিস্থিতিতে মার্কিন কর্মকর্তারা সৌদি আরবকে অনুরোধ জানান, ইসরায়েলকে যেন তারা তাদের কাছে থাকা থাড প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করে। উল্লেখ্য, থাড প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এবং মাত্র কয়েকমাস আগেই সৌদি আরবে এটি এসে পৌঁছায়। গত ৩ জুলাই তারা আনুষ্ঠানিকভাবে থাড ব্যাটারির উদ্বোধন করে।
মিডেল ইস্ট আই-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের কাছে যুক্তি দিয়েছিল যে, ইরান যেমন ইসরায়েলের শত্রু, তেমনই সৌদিরও শত্রু। এ কারণে তাদের ইসরায়েলকে সহায়তা করা উচিত। তা সত্ত্বেও সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। এতে মার্কিন কর্মকর্তারা ক্ষুব্ধ হন।
ইরানের অব্যাহত ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে ইসরায়েলের নিজস্ব তিন ধাপের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং মার্কিন সহায়তায় থাকা প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্রগুলোও কমে আসছিল। এরপরেও ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইসরায়েলি শহর ও সামরিক কেন্দ্রগুলোতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়।
সৌদি আরবের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এটি একদিকে যেমন মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, অন্যদিকে ফিলিস্তিন ইস্যুতে সৌদি আরবের ঐতিহ্যবাহী অবস্থানের প্রতিফলন হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন: