জুলাই ২০, ২০২৫, ০৫:৩২ পিএম
আমাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (কেরানীগঞ্জ) অসুস্থ অবস্থায় ৭০ বছর বয়সী এক কয়েদির মৃত্যু হয়েছে। এস এম আব্দুল হক নামের এই কয়েদিকে গত রোববার (২০ জুলাই) দুপুরে অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনা কারাগারের অভ্যন্তরে অসুস্থ কয়েদিদের স্বাস্থ্যসেবার মান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মৃত এস এম আব্দুল হক ছিলেন খুলনার পাবলা কবি ফররুক অ্যাকাডেমি মোড়ের মৃত ইমান আলী শেখের ছেলে। তিনি কোন মামলায় কারাগারে ছিলেন, তাৎক্ষণিকভাবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। কারারক্ষী মো. রোকন, যিনি আব্দুল হককে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন, জানান যে গত রাতে খুলনা কারাগারে আব্দুল হক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে প্রথমে ঢাকার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে দ্রুত ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, কিন্তু ততক্ষণে তিনি মারা যান।
কারা কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে, অসুস্থ কয়েদিদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে, আব্দুল হকের ক্ষেত্রে প্রথমে খুলনার কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর এবং এরপরই তার অবস্থার অবনতি হওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এই স্থানান্তর প্রক্রিয়া এবং পরবর্তীতে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসার সময়ক্ষেপণ তার মৃত্যুর কারণ হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হতে পারে।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক নিশ্চিত করেছেন যে, মরদেহ বর্তমানে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তার মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। ময়নাতদন্তের পর, কারা কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন হাতে আসার পর তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।
পরিশেষে বলা যায়, কয়েদি এস এম আব্দুল হকের এই মৃত্যু কারা অভ্যন্তরে বন্দীদের স্বাস্থ্যসেবা এবং অসুস্থতার দ্রুত ব্যবস্থাপনার গুরুত্বকে আবারও সামনে এনেছে। ভবিষ্যতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে কারা কর্তৃপক্ষকে অসুস্থ বন্দীদের জন্য আরও উন্নত এবং দ্রুত চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এই মৃত্যুর ঘটনায় স্বচ্ছ তদন্ত জনমনে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে।
আপনার মতামত লিখুন: