সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫, ১০:১২ এএম
দেশের নদ-নদী, খাল, জলাশয় ও হাওর খননে পরিকল্পিত কার্যক্রম নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার প্রথমবারের মতো ‘ড্রেজিং ও ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা, ২০২৫’ প্রণয়ন করেছে। এই নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, খননকাজের জন্য কেবলমাত্র সরকার অনুমোদিত ড্রেজার ব্যবহার করা যাবে। অন্যথায়, এই ধরনের খননকাজ অবৈধ বলে গণ্য হবে।
গত জুলাই মাসে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত এই নীতিমালা সরকারি, বেসরকারি, বা যৌথভাবে ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালনাকারী সব পক্ষের জন্য প্রযোজ্য। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো নদী খনন, নৌরুট পুনরুদ্ধার, কৃষি ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা।
নীতিমালার প্রধান দিকগুলো হলো:
-
অনুমোদন ও পরিকল্পনা: যেকোনো ড্রেজিং কার্যক্রম শুরুর আগে পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ করে একটি ‘ড্রেজিং মাস্টারপ্ল্যান’ প্রণয়ন করতে হবে। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনার পর এই মাস্টারপ্ল্যান চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে।
-
ড্রেজড ম্যাটেরিয়ালের ব্যবস্থাপনা: ড্রেজিংয়ের ফলে প্রাপ্ত মাটি বা পলি (ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল) ব্যবস্থাপনার জন্য সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকবে। এর পরিকল্পিত ব্যবহার ও ব্যয় সংক্রান্ত সুপারিশও দিতে হবে।
-
অগ্রাধিকার: স্বল্প প্রবাহ বা প্রবাহহীন নদী ও জলাশয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য ক্যাপিটাল ড্রেজিংকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
-
দখলমুক্ত করা: জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়া নদীগুলো অবৈধ দখলমুক্ত করার ওপর জোর দিতে বলা হয়েছে।
-
আইন প্রয়োগ: সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো নদী, খাল বা জলাশয় থেকে ড্রেজিং করা যাবে না। ‘বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ (সংশোধন ২০২৩)’ এবং ‘বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০)’ এর বিধান অনুযায়ী, প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় এবং নদীর পাড় ভাঙনের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে ড্রেজিং করা নিষিদ্ধ।
এই নীতিমালা জারি হওয়ার দিন থেকেই কার্যকর বলে ধরা হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের জলপথ ব্যবস্থাপনায় একটি সমন্বিত ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।