শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৫ আশ্বিন ১৪৩২

রাজনীতিতে বিভক্তি চরমে

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫, ১০:০৭ এএম

রাজনীতিতে বিভক্তি চরমে

ছবি - সংগৃহীত

বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন বিভক্তি চরমে। জুলাই বিপ্লবে যে রাজনৈতিক ঐক্য দেখা গিয়েছিল, তা এখন আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভেঙে পড়ছে। বিশেষ করে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এবং আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য সুস্পষ্ট।

বিএনপি যেখানে জুলাই সনদের সাংবিধানিক বিষয়গুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদের মাধ্যমে সমাধানের পক্ষে, সেখানে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ সাতটি রাজনৈতিক দল জুলাই সনদের আইনি রূপ দিয়ে এর ভিত্তিতেই জাতীয় নির্বাচন চায়। এই দলগুলো বৃহস্পতিবার থেকে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে রাজপথে নেমেছে। তাদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন।

  • সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু।

  • জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

এই দলগুলো জোটের কথা না বললেও, জনগণের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে যে তারা বিএনপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে কি না। তারা বলছে, তাদের আন্দোলন জনগণের পক্ষে এবং এর লক্ষ্য হলো সরকারের আমলেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করা।

জামায়াতসহ অন্যান্য দলগুলোর এই কর্মসূচির বিষয়ে বিএনপি সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। দলের নীতিনির্ধারকরা আশঙ্কা করছেন যে, এই আন্দোলন রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আবার অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। তাদের মতে, জামায়াত ও অন্যান্য দলগুলোর এই আন্দোলন আপাতদৃষ্টিতে সরকারের বিরুদ্ধে মনে হলেও, এর মূল দ্বন্দ্ব বিএনপির সঙ্গে।

বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, ঐকমত্য কমিশনে যখন জুলাই সনদ নিয়ে আলোচনা চলছে, তখন রাজপথে আন্দোলনের ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তারা মনে করেন, এই দলগুলো বিএনপির বিপরীতে একটি বড় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে নিজেদের দৃশ্যমান করতে চাইছে।

বিএনপি কোনোভাবেই এমন কোনো উত্তপ্ত পরিস্থিতি চায় না, যা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তাই তারা সর্বোচ্চ ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দলগুলোর মধ্যে এই বিভক্তি ও বিভাজন অব্যাহত থাকলে রাজনৈতিক সংকট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। যদি এই দলগুলো একে অপরকে ছাড় না দেয়, তাহলে পরাজিত শক্তি এই সুযোগ নেবে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা যদি ঐক্য ও সমঝোতার পথে না হাঁটেন, তাহলে নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ ও শঙ্কা আরও বাড়বে।